মেদিনীকথার উৎসর্গ কবির কলমে হরিনাথ দে।

ফাইল চিত্র,

✍️ শীর্ষেন্দু দাস
( প্রাক্তন শিক্ষক )

শ্রুতিধর হরিনাথ দে

জন্ম - 12.08.1877 মৃত্যু - 30.08.1911.
পিতা-ভূতনাথ দে। 
মাতা-এলোকেশী দেবী।

হরিনাথ দে নামটিতে জ্ঞানের তিয়াষা
জীবন চৌত্রিশ মাত্র, জানা ছত্রিশ ভাষা!

শ্রুতিধর হরিনাথ-মাতা এলোকেশী
পিতা ভূতনাথ দে, আড়িয়াদহবাসী।
বর্ণমালা যেদিনেই চেনালেন মাতা
সেদিনেই বর্ণ সব মেঝে-দেওয়ালে গাঁথা,
কয়লা দিয়ে যবে হরি গাঁথে বর্ণগুলি
দেখিলেন সেই মাতা নয়ন বিষ্ফারি!

ঋষি অরবিন্দ দাদা মনমোহন ঘোষ
হরি স্মৃতি পরীক্ষায় পেলেন সন্তোষ।
দু'প্রিরিয়ড অবসরে প্রায় দু'শ লাইন
রচিলেন ঘোষ স‍্যার অন্তমিলহীন।
হরিনাথে শোনালেন এক অবসরে
শ্রোতা শুনিলেন কিন্তু চোখ বন্ধ করে।
অতঃপর মনোমোহন কহিলেন তাঁরে
কবিতাটি কি হরিনাথ বলেবারে পারে?
কবিতাটি? হরিনাথ জিজ্ঞাসার পর
বন্ধহীন জল সম কহে অনর্গল।

এখানেই বিস্ময়ের নয় কিন্তু শেষ
একথা শুনিলে উপাচার্য্য আশুতোষ, 
হরিনাথে ডেকে তিনি দেন এক বই।
কহিলেন হেন বই দেশে আর নেই,
তোমারে দিলেম রেখো বড়ো যত্ন করে।
ফেরৎ দিলেন হরি বইখানি পড়ে
                         বহু যত্ন করে,
                          দিন কয়েক পরে।
কিছুদিন পরে পূনঃ হরিরে ডেকে কন
ওই বইটা ছিল মোর বেশ প্রয়োজন,
কিন্তু এখানে দেখ বই নাহি পাই
কি করি এখন হরি? উপায় কিছু নাই?
হরি বলে, যদি স‍্যার দু'টো দিন দেন
লিখে দেব বইখানি, তেমনি পাবেন।
দুই দিন পর বাঘ কি যে হতবাক
কমা যতি পূর্ণচ্ছেদ কিছু নাই বাদ!।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবী ভাষায়
দুই খণ্ড ব‍্যাকরণ রচণা আশায়
আরবী পণ্ডিত আর হরিনাথ দে কে
আনিলেন আশুতোষ একইসাথে ডেকে।
পণ্ডিত পিছিয়ে গেল সময় নেই বলে
দু'খণ্ডে রচনা দায়িত্ব হরি তাই নিলে।
পাণ্ডুলিপি এনে দিল নিদ্ধারিত দিনে
অতিরিক্ত একদিনও ছুটি নাহি নিয়ে।

যদুনাথ সরকার বা প্রফুল্ল ঘোষ
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র পেলেন সন্তোষ
অনুবাদের যখনই হল প্রয়োজন
হরিনাথে সিদ্ধ হতো সব আয়োজন।

মহাপ্রাণ কতখানি সে হিসাবও লহ
দরিদ্র বিপন্ন চেয়ে ফেরেনি কখনো,
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধনভাণ্ডার খানি
তাঁর দানে প্রেরণাতে গড়া হলো জানি।

বঙ্কিমের মন্ত্রধ্বনি 'বন্দেমাতরম্‌'
অনুবাদী ইংরেজীতে প্রকাশে যখন,
মনে নাহি আনে হতে পারে বিপর্যয়
যেহেতু ইংরেজ রাজা, নাহিক সংশয়।

টাইফয়েড না হরিলে এই  মহাপ্রাণ
কত না উজ্জ্বল হোত দেশের সম্মান!
বিদ‍্যাযোগী সিদ্ধযোগী যোগী-মহারাজ
তোমারে জানায় শ্রদ্ধা শিক্ষা-যোগী আজ।

আপনিও পাঠাতে পারেন আপনার এলাকার তথ্য, আপনার লেখা ছড়া, কবিতা, ছোটগল্প বা আপনার আঁকা ছবি।
আমরা বিচার বিশ্লেষণ করে শর্তসাপেক্ষে তা সর্বসমক্ষে প্রকাশ করব, আপনাদের প্রিয় এই ওয়েবসাইটে
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সংযুক্ত হতে চাইলে এই লেখার উপর ক্লিক করুন 👈

Social Share

অনুসন্ধান !!

এখনকার খবর !!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *