মেদিনীকথার উৎসর্গ কবির কলমে সুজয়া গুহ।

ফাইল চিত্র,

✍️ **শীর্ষেন্দু দাস** ( প্রাক্তন শিক্ষক )

সুজয়া (বসু) গুহ

জন্ম - 30.01.1938 মৃত্যু - 25.08.1970
পিতা-প্রভাসচন্দ্র বসু
মাতা-আশাদেবী
স্বামী-কমল গুহ (শঙ্কু মহারাজ)

বরিশালের পাতার হাট রচে জন্মকথা
প্রভাসচন্দ্র বসু পিতা আশাদেবী মাতা।
ব্রিটিশের রোষে পিতা হ'য়ে দেশান্তরী
সুদূর নেপালে গিয়ে নিলেন চাকুরী।
সুজয়ার বাল‍্যকাল নেপালেই কাটৈ
পাহাড় পর্ব্বত সাথে পাথরের বাটে।

সেই থেকে পর্ব্বতের ছিল আকর্ষণ
শঙ্কু মহারাজে বরি প্রেরণা প্লাবন।
লেক গার্লস্ ধন‍্য বটে ব্র‍্যাবোন কলেজ
যাদবপুর ধন‍্য যার ছাত্রীটি সতেজ।
পর্ব্বতের দুর্গমতা বন্ধুরতা সাথে
নিবিড় বন্ধনে, স্বামী সহ অমরনাথে।

দার্জিলিং হিমলয়ান মাউন্টেনিয়ারিং
ছাত্রী সেথা পূর্বকথা সদস‍্যা ইদানিং।
ঊনিশ'শ সাতষট্টি সালে প্রথম বঙ্গে
পর্ব্বতাভিযানে নারী সুজয়ার সঙ্গে,
সদস‍্যা হওয়ার মাত্র তিন বছর পর
নিজ বাড়ী অভিযান করিয়া দপ্তর।

বিজয় করিয়া যবে ফেরে নারীদল
বসুমতী প্রকাশিল ধারাবাহিক ফল
সুজয়ার লেখনীতে। এই সে প্রথম
নারীর কলমে বর্ণনা পর্ব্বত গমন।
আরো পারদর্শী হ'তে হ'য়ে অভিলাষী
নেহরু মাউন্টেনিয়ারিংএ যান উত্তর কাশী।

"পথিকৃৎ'ক্লাব তিনি করেন প্রতিষ্ঠা
পর্ব্বতারোহী নারীগোষ্ঠী দানিতে অভিষ্ঠা।
ঊনসত্তর সালে-চন্দ্রবিজয় যবে
কেমনে পর্ব্বত ছাড়া সুজয়া বা রবে?
'রূপকুণ্ড' 'গোণাতাল' 'কুঁয়রী' বিজয়
তবু এতে তুষ্ট নয় সুজয়া হৃদয়।

আরো চাই আরো চাই শুধু মেয়েরাই
সত্তরে 'লাহুল' পথে 'অনামী' যে চাই।
দুই শূন্য এক তিন শূন‍্য ফুটে চ'লে
বিজয়ে ফিরিতে ছিল বিজয়িনী দলে।
খরস্রোতা 'করচনালা' পার হ'তে গিয়ে
সদস‍্যা কমলা সাহা গেল যে তলিয়ে।

সেই শোকে সুজয়ার প্রাণ বিসর্জন
অনামী-'ললনা শৃঙ্ঘ' ঘোষণা কারণ।
সুজয়ার দাহ যেথা হিমাচলে হয়
দুই নারী তরে দুটি স্মৃতিস্তম্ভ রয়।
সুজয়া গুহ স্মৃতি তহবিলের নামে
সরঞ্জাম ভাণ্ডার আছে মাউন্টেনিং ধামে।

শ্রেষ্ঠ নারী অভিযাত্রী দল ফি বছর
শিল্ড পান গুহ নাম রাখিতে অমর।
কষ্ট সহিষ্ণুতা আছে, আছে বুকে বল
সহ‍্য গুণে অবলা যে জননীর দল
তাঁহাদের মাঝে আছে সু-জয়া সুজয়া
পরমা প্রকৃতি পরা প্রণম‍্য প্রণয়া
তুচ্ছতার আবরণ ভেদ করিবেই
বীরাঙ্গনা সুজয়ারা বঙ্গ বিজয়ীই।