ফাইল চিত্র,
ভারতকেশরী ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখ্যোপাধ্যায়
জন্ম - 06.07.1901. মৃত্যু - 23.06.1951.
জনক-বাংলার বাঘ আশুতোষ মুখ্যোপাধ্যায়।
জননী-যোগমায়া দেবী।
বাংলার বাঘ আশুতোষ মুখ্যোপাধ্যায়ের ও যোগমায়া দেবীর পুত্র, ভারতকেশরী শ্যামাপ্রসাদ মুখ্যোপাধ্যায়ের জন্ম 1901 সালে 6 জুলাই কলকাতার ভবানীপুুরে জন্মগ্রহণ করেন।
অসাধারণ মেধাবী শ্যামাপ্রসাদ স্মাতক (সাম্মানিক) হন ইংরেজী বিষয়ে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে।কিন্তু স্মাতকোত্তর পাঠের সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নতুন বিষয় যুক্ত হওয়ায় এবং আশুতোষ মুখ্যোপাধ্যায় উপাচার্য্য হিসাবে এম.এ.তে বাংলা ভাষা যুক্ত করায় একরকম বাধ্য হয়ে শ্যামাপ্রসাদকে ওই বিষয় নিতে হয়। কিন্তু আবারও তিনি প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়েই উত্তীর্ণ হন।
অসাধারণ মেধার কারণে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষা কমিটির সদস্য ও পরে ফেলো হিসাবে নির্বাচিত হন।1924 সালে পিতার আকষ্মিক মৃত্যুর পর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিণ্ডিকেটের সদস্যও হন। কংগ্রেস দল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি রূপে তাঁকে বঙ্গীয় আইন সভার প্রতিনিধি হিসাবেও দেখা গেছে,কংগ্রেসের সঙ্গে মত বিরোধের কারণে পদত্যাগ করলেও পরে ওই পদে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন।
মাত্র তেত্রিশ বছর বয়সে (আমার জানা পৃথিবীর যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সব চেয়ে কম বয়সে) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য নিযুক্ত হন। যদি মোহমুক্তভাবে কাজের পর্যালোচনা করা হয়, তাহলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর স্থান হবে দ্বিতীয় ঠিক তাঁর পিতার পরেই কিন্তু এক্ষেত্রেও মনে রাখতে হবে পিতা আশুতোষ পর পর চারবার অর্থাৎ আট বছর ওই পদে ছিলেন, অপরপক্ষে পুত্র শ্যামাপ্রসাদ ছিলেন পর পর দু'বার অর্থাৎ চার বছর। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথকে অধ্যাপক হিসাবে বরণের কৃতিত্ব তাঁরই। যাঁরা শ্যামাপ্রসাদকে সাম্প্রদায়িক হিসাবে চিহ্নিত করেন তাঁরা জেনে হয়ত দুঃখই পাবেন যে ওই শ্যামাপ্রসাদই 'ইসলামের ইতিহাস ও তার সংস্কৃতি' এম.এ.তে পাঠ্য বিষয় হিসাবে যুক্ত করেছিলেন।...
আমরা যারা মেদিনীপুরের মানুষ তারা একসময় তাঁকে 'মেদিনী বান্ধব' বলে চিহ্নিত করেছিলাম- আজ হয়ত রাজনৈতিক সুবিধা পাবার কারণে ভুলে গেছি বা ভুলে আছি। সে এক সময়! মেদিনীপুরের নাম শুনলেই ইংরেজ শাসক বাইরে তর্জ্জন-গর্জ্জন করলেও ভেতরে ভেতরে কাঁপত।পর পর চারজন দোর্দণ্ড প্রতাপ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্য্যকাল শেষের আগেই ইহকাল শেষ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। বিপ্লবীরা প্রাণ দিয়েছে কিন্তু মেদিনীপুরের মান বাড়িয়েছে। ভারতবর্ষে কত জেলা আছে, কয়টা জেলার নাম জানি? কিন্তু আপনি ভারতের যেকোনো জায়গায় যান, মেদিনীপুর বললেই বলবে-ও মেদিনীপুর অর্থাৎ নামটা চেনে। এই চেনানোর ক্ষেত্রে মহাপুরুষ বিদ্যাসাগর মহাশয়ের অবদান আছে কিন্তু ওই বিপ্লবীদের অবদান কিছু কম নয়, সত্যিকারে বলতে গেলে বেশীই। সেই মেদিনীপুরকে শিক্ষা দেবার(সবক শেখানোর) সুযোগ পেলে কি ইংরেজ সরকার ছাড়ে-যতই সুসভ্য জাত বলে বড়াই করুক না কেন।
সালটা 1943।বাংলায় ১৩৫০। অনেকে এখনও পঞ্চাশের মন্বন্তর স্মরণ করতেও পারেন। মেদিনীপুরের অবিসংবাদী নেতা বাংলার কালো ষাঁড়- দেশপ্রাণ তখন অস্তমিত(1934)।
সাইক্লোন। বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী কাঁথি একেবারে বিধ্বস্ত।তার উপর প্রবল বর্ষণ।বন্যা। মেদিনীপুর বিধ্বস্ত।দুর্ভিক্ষ। কে দেবে ভিক্ষা?কার বা কি আছে। যাঁদের গোলা ভর্ত্তি ধান ছিল ভেসে গেছে।যেটুকু কোনক্রমে বাঁচানো গেছে তাতে তো দান খয়রাত করা যায় না-নিজের পরিবারকে তো বাঁচাতে হবে। ঠিক এইখানেই সুযোগ নিল ইংরেজ সরকার। খবর ব্ল্যাক আউট অর্থাৎ কিনা সংবাদটা প্রকাশ না করা। যেমন আজকের দিনে দেখতে পাচ্ছেন তথাকথিত মেইন স্ট্রিম মিডিয়ার কাণ্ডহীন কর্ম্মকলাপ। এখন অবশ্য অন্যান মাধ্যম আছে বলে খরব একেবারে চেপে রাখা যাচ্ছে না। কিন্তু তখন? কাগজ বা কয়টা, পাওয়া যায় বা কোথায়, পড়ে বা কয়জন? এই সুযোগ। মরুক মেদিনীপুর।
যে কোনভাবেই হোক খরবটা পেলেন শ্যামাপ্রসাদ। অমনি ছুটে এলেন। বিভিন্ন রাজ্যের সংবাদ পত্রে প্রকাশের ব্যবস্থা করলেন। প্রবল জনমতের চাপ সৃষ্টি করে বাধ্য করলেন ইংরেজ সরকারকে, ত্রাণ দিতে।
দুর্দিনের এই বন্ধুকে মেদিনীপুর চিহ্নিত করল- 'মেদিনী বান্ধব'। কথা কিন্তু এখানেই শেষ নয়। ধূর্ত্ত ইংরেজ দিনের বেলায় ত্রাণ দিয়ে রাতের বেলায় লুট করানোর ব্যবস্থা নিল।আবারও শ্যামাপ্রসাদকে আসরে নামতে হল, পাড়ায় পাড়ায় পাহারার ব্যবস্থা করলেন স্থানীয়দের দিয়েই।
সরকারী মতে মৃত পঁয়ত্রিশ লক্ষ। কে জানে আসল সংখ্যা কত? শ্যামাপ্রসাদ না থাকলে গোটা অবিভক্ত মেদিনীপুরটাই উজাড় হয়ে যেত।
হে ভারতকেশরী! হে বাংলা মায়ের দরদী সন্তান! হে সংসপ্তক! তোমায় প্রণাম, প্রণাম, প্রণাম।তুমি পথ প্রদর্শনের জন্য আবার আমাদের মধ্যে ফিরে এসো-কায়মনোবাক্যে এই প্রার্থনা।
এক দেশে-এক প্রধান, এক বিধান ও এক নিশান আন্দোলনের, এই সংসপ্তক বীরের জাতির প্রয়োজনে আত্মদান দিবসকে,"বলিদান দিবস" হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
পাকিস্তানী হানাদারদের অর্তকিত আক্রমণে জর্জরিত কাশ্মীরের মহারাজ হরি সিং, 26.10. 1947 ভারতভুক্তির চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পর, ভারতীয় বাহিনী দখলমুক্তির অভিযানে যখন দখলদার পাকিস্তানী ফৌজ ত্রস্ত,ত্রাহি ত্রাহি বরে তীব্রবেগে লাহোর অভমূখে গৌরবজনক পশ্চাৎ অপসারণে ব্যস্ত,আর একটা দুটো দিন হলেই পুরো কাশ্মীর দখল মুক্ত হওয়া নিশ্চিত তখন স্বঘোষিত পণ্ডিত, গান্ধীজির হস্তক্ষেপে হওয়া প্রধানমন্ত্রী (13--1 ভোটে হেরে যাওয়া পরেও) জওহরলাল নেহরু, ভারতীয় বাহিনীকে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন এবং জীবনের চুড়ান্ত মূর্খতার নিদর্শন স্বরূপ কাশ্মীরকে সমস্যা বানিয়ে তুলে দিলেন জাতিসঙ্ঘের দ্বারে-যা আজও ভারতকে ভুগিয়ে চলেছে।
শেষ এখানেই নয়। জাতির আত্মমর্যাদা চুড়ান্ত
ভূলুণ্ঠিত করে, একই দেশের অংশ হিসেবে অবশিষ্ট কাশ্মীরের জন্য৩৭০ ধারার মাধ্যমে, আলাদা প্রধানমন্ত্রী, সংবিধান ও পতাকা মেনে নিয়ে জাতিকে দিলেন চরম লজ্জা, সঙ্গে সঙ্গে স্থায়ী নাশকতার বীজ রোপণ এর পথপ্রশস্থ করে দিলেন।
দূরদৃষ্টি সম্পন্ন শ্যামাপ্রসাদের সংগ্রাম, এই চরম লজ্জা ও নাশকতার বিষবৃক্ষের বিরুদ্ধে।তিনি বুঝেছিলেন, নেহরুর এই চরম হঠকারিতার মূল্য জাতিকে চরমভাবে দিতে হবে। গদির জন্য তিনি তোষামদের রাজনীতি করেননি বরং প্রতিবাদে মন্ত্রীত্ব ত্যাগ করে আন্দোলনে ঝঁপিয়ে পড়েছিলেন- নশ্বর দেহের মায়া না করে।
"এক দেশ মে দো প্রধান, দো বিধান, দো নিশান-নেহী চলেগা, নেহী চলেগা" বজ্র নির্ঘোষে কাশ্মীর অভিযান চালালেন-অপমানজনক পারমিট অস্বীকার করে। মাধোপুর চেকপোস্ট এ গ্রেপ্তার হন। অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েন।এক্ষেত্রে নিরপেক্ষ সরকার হলে মুক্তি দিত বা স্বাস্থ্যকর পরিবেশে স্থানান্তর করত। কিন্ত্ত কি আশ্চর্য! পারিবারিক ডাক্তারের নিষেধ আছে জাননো স্বত্ত্বেও, জোর করে স্টেপস্টোমাইসিন ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় এবং কয়েক ঘন্টার মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।23.06.1953 তে কাশ্মীরের জেলে,ধীর বিষাক্তকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, ভারতকেশরী শ্যামাপ্রসাদ মুখ্যোপাধ্যায়কে মৃত্যু মুখে ঠেলে দেওয়া হয়--যা একপ্রকার খুনেরই নামান্তর।
গত ৫ই আগষ্ট২০১৯এই লজ্জা জনক ইতিহাসের পরিসমাপ্তি ঘটানো গেছে-আত্ম বলিদানের৬৭তম বর্ষে।
শ্যামাপ্রসাদ দেহধারী হে অমর আত্মা! তুমি দেখ,তোমার আত্মদান ব্যর্থ হয়নি, জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের সংগ্রামে, আমারা তোমার সহযোগী হতে পেরেছি, তুমি আমাদের প্রাণভরা আশীর্বাদ দাও-সেই হোক আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পাথেয়। সার্থক হোক্-আত্ম বলিদান।
বেদমন্ত্রে আহ্বান জানাই---
" ওঁ যত্তে মরীচীঃ প্রবতো মনো জগাম দূরকম্।
তত্ত আ বর্তয়ামসীহ ক্ষয়ায় জীবসে। ওঁ।।"
তোমার যে মন চর্তুদিকে বিকীর্যমান কিরণমণ্ডলে চলে গিয়েছে, তাকে আমারা ইহলোকে ফিরে আসার প্রার্থনা জানাচ্ছি। তুমি আবার এই মরলোকে আমাদের মধ্যে ফিরে এসো।

( প্রাক্তন শিক্ষক )
🙏 যদি আপনি আপনার গ্রাম বা শহরকে ভালোবেসে থাকেন, তাহলে আপনিও পাঠাতে পারেন আপনার এলাকার তথ্য আমাদের কাছে।
নীচের লিংকে ক্লিক করে যোগ দেন আমাদের সাথে, তথ্য পাঠান হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের এডমিন দের কাছে, আপনার তথ্যটি বিবেচনা করে সর্বসমক্ষে প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পেজ ও গ্রুপে।💐
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সংযুক্ত হতে চাইলে এই লেখার উপর ক্লিক করুন 👈⬇️🔽⬇️🔽⬇️🔽⬇️🔽⬇️
আমাদের 👨💻 ওয়েবসাইটের ঠিকানা 👇
https://www.MEDINIKOTHA.in
আমাদের 🎦 ইউটিউবের ঠিকানা 👇
https://www.youtube.com/c/MEDINIKOTHA
আমাদের 🖼️ ইনস্টাগ্রামের ঠিকানা 👇
https://www.instagram.com/medinikotha
আমাদের 🤳 ফেসবুক গ্রুপের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/groups/medinikotha
আমাদের 🚻 ফেসবুক গ্রুপ কাঁথি মহকুমা ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/groups/contaigroup
আমাদের 🚀 টেলিগ্রাম গ্রুপের ঠিকানা 👇
http://t.me/medinikotha
আমাদের ✈️ টেলিগ্রাম চ্যানেলের ঠিকানা 👇
https://t.me/medinikatha
আমাদের 📧 ই-মেইল ঠিকানা 👇
medinikotha.contai@gmail.com
আমাদের 🗃️ কাঁথি পেজের ঠিকানা 👇 https://www.facebook.com/ContaiSubdivision
আমাদের 📖 দীঘা পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/DighaOldNew
আমাদের 📝 এগরা পেজের ঠিকানা👇
https://www.facebook.com/Egra2
আমাদের 📒 রামনগর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Ramnagar4
আমাদের 📔 হেঁড়িয়া পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Henria
আমাদের 📕 খেজুরী পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Khejuree
আমাদের 📙 নাচিন্দা পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/NachindaMa
আমাদের 📙 তাজপুর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Tajpoor
আমাদের 📓 শংকরপুর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Sankarpoor
আমাদের 📃 সাতমাইল পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Satmile
আমাদের 📄 পেটুয়াঘাট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Petuaghat
আমাদের 🗒️ দেউলীহাট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Medinikotha6
আমাদের 📘 জুনপুট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Junput2
আমাদের 📗 বাঁকিপুট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Bakiput
আমাদের 📚 মান্দারমনি পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Mandarmanee
আমাদের 🛰️ ওয়েবসাইট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/medinikotha.in
