সময়টা ইং ১৮৭০। কাঁথি তখনও শহর হয়ে ওঠেনি। সেই মফঃস্বল কাঁথির বুকেই এই ইং ১৮৭০ খ্রীষ্টাব্দে স্থাপিত হলো ”প্রার্থনা সমাজ ”। আর এই প্রার্থনা সমাজ -ই বেশ কয়েকবছর পরে ব্রাহ্মসমাজ- এ রূপান্তরিত হলো। ইং ১৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দে আঠিলাগড়ীর বীরনারায়ন পাহাড়ীর দেওয়া জায়গাতেই গড়ে উঠলো কাঁথি তৎ সৎ ব্রাহ্মসমাজ মন্দির। সেই সময় এই ব্রাহ্মসমাজ মন্দিরটি গড়ে তুলবার ক্ষেত্রে উপেন্দ্রনারায়ন মজুমদার, কালীনাথ দে , প্রভাত চট্টোপাধ্যায়, গোপালচন্দ্র বসু, তারাচাঁদ পাল, শশীভূষণ চক্রবর্তী প্রমুখ ব্যক্তিগন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্ৰহণ করেছিলেন।
কাঁথিতে ব্রাহ্মসমাজের শাখা গঠন ও ব্রাহ্মসমাজ মন্দির স্থাপন ছিল একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। শুধুমাত্র ধর্মচর্চা নয় কাঁথির সমাজ সংস্কার, সংস্কৃতিক চেতনার প্রসার ও মানোন্নয়ন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা , আর্তের সেবা, বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পূজ্য দেবদেবীদের প্রতি বিদ্রুপ না করা প্রভৃতি ব্রত পালনের উদ্দেশ্যেই এই সংস্থা গঠিত হয়েছিল।
কাঁথি ব্রাহ্মসমাজ মন্দিরের দ্বারোৎঘাটন করেছিলেন সুবিখ্যাত শিবনাথ শাস্ত্রী। এই কাঁথি ব্রাহ্মসমাজ -এর উদ্যোগেই অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার মধ্যে ইং ১৯০৪ খ্রীষ্টাব্দে কাঁথি শহরে প্রথম মহিলা সমিতি স্থাপিত হয়েছিল। কাঁথি শহরে নারী শিক্ষার পথিকৃৎ রূপেও এই সমিতি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্ৰহণ করেছিল। ইং ১৯০৭ খ্রীষ্টাব্দে মাত্র পাঁচ জন ছাত্রীকে নিয়ে কাঁথি ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন এই সমিতির তৎকালীন সদস্যদের এক উল্লেখযোগ্য কীর্তি।
সেই কাঁথি ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয় আজও ( শতবর্ষ উত্তীর্ণ হয়েও ) কাঁথি মহকুমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রূপে পরিগনিত হয়ে থাকে। আর কাঁথি শহরের একপ্রান্তে কাঁথি ব্রাহ্মসমাজ মন্দির আজও রয়েছে দাঁড়িয়ে বহু অকথিত ইতিহাসের নীরব সাক্ষী হয়ে !!
🌸এই রকম কাঁথির আরও তথ্য পেতে ও সমগ্র কাঁথি মহাকুমার আপডেট পওয়ার জন্যে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সংযুক্ত হতে চাইলে এই লেখার উপর ক্লিক করুন 👈