ফাইল চিত্র,
নাম
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর নামটির সাথে যে নাম উচ্চারিত হয় , সে নামটি হল আরেক তরুণ শহীদ প্রফুল্ল চাকী । তিনি ছিলেন বাংলা তথা ভারতের এক বিশিষ্ট সশস্ত্র বিপ্লবী । প্রফুল্ল চাকী ছিলেন উনিশের দশকের প্রথম দিককার অগ্নিযুগের অন্যতম বীর বিপ্লবী যিনি দেশের জন্য আত্মত্যাগ করেছিলেন । তাঁর এই আত্মবলিদান পরবর্তী প্রজন্মের বিপ্লবীদের প্রেরণা হয়ে উঠেছিল ।
অত্যাচারী কিংসফোর্ডকে হত্যার পরিকল্পনা কারি বীর বিপ্লবী । তিনি ইংরেজদের হাতে ধরা পড়বার আগেই নিজের মাথায় নিজে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন । ইংরেজরা তার দেহ থেকে থেকে মাথাটিকে কেটে আলাদা করে কলকাতায় পাঠিয়েছো মাথাটি । তাই বীর বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকী আত্মহত্যা করেছিলেন নাকি তাকে ইংরেজদের দ্বারা হত্যা করা হয়েছিল তা নিয়ে আজও বিতর্ক আছে ।
জন্ম:
১০ ই ডিসেম্বর, ১৮৮৮ সাল
আত্মবলিদান:
২ রা মে, ১৯০৮ সাল
১৮৮৮ সালের ১০ ই ডিসেম্বর রংপুরে প্রফুল্ল চাকি জন্ম গ্রহন করেন, তার পিতার নাম রাজনারায়ণ চাকি । তাদের আদি নিবাস ছিল বগুড়ার বিহারগ্রামে । রংপুরে স্কুলে ভর্তি হলেন প্রফুল্ল চাকি । স্কুলে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে একটি কুস্তির আখড়া তৈরি করেছিলেন তিনি । ছোটো বেলা থেকে কুস্তি শিক্ষা, লাঠি খেলা, ছােরাখেলা মনোযোগ দিয়ে করতেন । তরবারি চালনাতে খুব সুন্দর হাত পাকিয়ে ছিলেন ।
নবম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালে পূর্ববঙ্গ ও আসাম সরকারের কার্লাইল সার্কুলার লঙ্ঘন করে ছাত্র সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য প্রফুল্ল চাকীকে স্কুল থেকে বহিষ্কৃত করা হয় । এরপর তিনি রংপুরের জাতীয় স্কুলে ভর্তি হন । এসময়েই তিনি জিতেন্দ্রনারায়ণ রায়, অবিনাশ চক্রবর্তী ও ঈশানচন্দ্র চক্রবর্তী-র মতো বিপ্লবীদের সংস্পর্শে আসেন এবং এর ফলেই তাঁর মাঝে উপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রবল ঘৃণা আর ক্ষোভ জন্মাতে শুরু করে ।
প্রথম থেকেই প্রফুল্ল চাকির মধ্যে নেতৃত্ব সুলভ মনােভাব ছিল । তখন ভারতের সর্বত্র বিক্ষোভ কেন্দ্রীভূত হওয়া শুরু হচ্ছে । একটির পর একটি গুপ্ত কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে বিভিন্ন জায়গাতে । প্রফুল্ল চাকি অল্পবয়সে এ জাতীয় গুপ্ত কেন্দ্রের সদস্য হলেন । যােগ দিলেন বান্ধব সমিতিতে । তখনও পর্যন্ত স্কুলের পাঠ শেষ হয়নি তার ।
১৯০৩ সাল তখন প্রফুল্লর বয়স পনেরাে বছর হবে তখনই তার সাহসিকতা দেখে তার সহকর্মীরা অবাক হয়ে যেতেন । মধ্যরাতে মাইলের পর মাইল একাই হেঁটে যেতেন । যে কোনাে কঠিন কাজ চোখের নিমেষে করতে পারতেন ।
স্বদেশি আন্দোলনের সময় রংপুরে জাতীয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হল । প্রফুল্লর ওপর একটি গুরুদায়িত্ব দেওয়া হল তাকে বলা হল ছাত্রদের লাঠিখেলা এবং মুষ্টিযুদ্ধর প্রশিক্ষণ দিতে হবে । প্রফুল্ল মন দিয়ে এই কাজ শুরু করলেন । তার চেষ্টায় বেশ কিছু সুদক্ষ লাঠিয়াল পাওয়া গিয়েছিলো । মুষ্টিযুদ্ধর শিক্ষাতেও ছাত্ররা বেশ দক্ষ হয়ে উঠল । শুধু তাই নয় , প্রফুল্ল একটি ত্রাণ কমিটিও গঠন করলেন । যে কোনাে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্যে, তিনি তার সঙ্গী সাথীদের নিয়ে সাধারণ মানুষের হাতে খাদ্য পৌঁছে দিতেন । সকলের মুখে মুখে তখন প্রফুল্ল চাকির নাম শোনা যাচ্ছে ।
ঠিক এমনই এক সন্ধিক্ষণে যুগান্তর দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বিপ্লবী বারীন্দ্রকুমার ঘোষ রংপুর ভ্রমণে আসেন । ১৯০৬ সালের শেষের দিকে বিখ্যাত বিপ্লবী বারীন ঘোষের সঙ্গে প্রফুল্ল চাকির দেখা হয় । প্রফুল্লকে দেখে বারীন বুঝতে পেরেছিলেন যে,এই কিশােরের চরিত্রের মধ্যে এক অসীম সাহসিকতা, উদ্যম ও স্বদেশচেতনা বোধে পরিপূর্ণ রয়েছে ।
বারীন্দ্র ঘোষের সঙ্গে প্রফুল্ল চাকীর পরিচয় হয়, তার পরেই প্রফুল্লর মনে গভীর ভাবে রেখাপাত করে । এরপর ১৯০৭ সালে বারীন ঘোষ কলকাতায় গোপন বোমা কারখানা গড়ে তোলার সময় তিনি প্রফুল্ল চাকীকে কলকাতায় নিয়ে যান ।
কলকাতা তখন স্বাধীনতার প্রাণকেন্দ্র, এখানে অসংখ্য গুপ্ত সমিতি স্থাপিত হয়েছে । ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে সশস্ত্র সংগ্রামীরা নিয়মিত কলকাতায় আসছেন । ব্রিটিশ সরকারও কলকাতাকে নিয়ে বেশ চিন্তিত । বারীন ঘােষের একান্ত অনুরােধে প্রফুল্ল পূর্ববাংলা থেকে কলকাতায় চলে এলেন । যুগান্তর কার্যালয়ে তাঁর থাকার ব্যবস্থা হল । কলকাতায় না এলে হয়তাে প্রফুল্লর জীবন এভাবে পরিবর্তিত হত না । কলকাতায় এসে তিনি বিপ্লবের বৃহওর অঙ্গনে প্রবেশের সুযােগ পেলেন । তখন অত্যাচারী রামফিল্ড ফুলার ছিলেন আসামের ছােটোলাট । ফুলারকে পৃথিবীর থেকে সরাতে হবে এমন একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হল । কার ওপর এই গুরু দায়িত্ব দেওয়া হবে ? প্রফুল্লকে নির্বাচিত করা হল ফুলার হত্যার ঘাতক হিসেবে । প্রফুল্ল ঠিক সময়ে ফুলারের ওপর আক্রমণ করলেন কিন্তু একটুর জন্য তার প্রয়াস ব্যর্থ হল, ফুলার অল্পের জন্যে রক্ষা পেলেন ।
প্রফুল্ল তার নাম পরিবর্তন করে গোপনে মানিকতলার বােমার আড্ডায় এসে বাস করতে থাকেন । প্রফুল্ল নিয়ম করে গুপ্ত দলের সভা সমিতিতে যােগ দিচ্ছেন ।
যুগান্তর মামলার বিরুদ্ধে প্রচারে অংশ নেওয়ায় একজন বাঙালি ছেলে সুশীল সেনকে চাবুক মারার সাজা দিয়েছিলেন, কিংসফোর্ড সাহেব জাতীয়তাবাদীদের কাছে কুখ্যাত ছিল । তিনি আলিপুর প্রেসিডেন্সি আদালতে মুখ্য হাকিম হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার সময় থেকেই নবীন রাজনৈতিক কর্মীদের কঠোর ও নিষ্ঠুর বাক্য প্রয়োগ করতেন । তিনি ওইসব কর্মীদের শারীরিক নির্যাতনের সাজা দিতেন । তাকে হত্যার পরিকল্পনা করলেন বই বোমার সাহায্যে কিন্তু সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয় ।
কিংসফোর্ড হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে এই খবর ইংরেজদের কাছে এসে পৌঁছলে ১৯০৮ সালের মার্চ মাসে বিচারকের নিরাপত্তার ভয়ে, কিংসফোর্ডের পদোন্নতি করে সরকার তাকে বিহারের মুজাফ্ফরপুর জেলার বিচারপতি হিসেবে বদলি করেন । তার সঙ্গে যায় আসবাবপত্র, লাইব্রেরি এবং বই বোমা ।
অনুশীলন সমিতি কিংসফোর্ডকে হত্যা করার প্রচেষ্টা জারি রেখেছিল । এপ্রিলে দুই সদস্যের একটা পরিদর্শক দল মুজাফ্ফরপুরে সফর করে, সেখানে যুক্ত ছিলেন প্রফুল্ল চাকি । প্রফুল্ল চাকি মুজাফ্ফরপুরে ফিরেছিলেন একটা নতুন ছেলেকে নিয়ে,যার নাম ক্ষুদিরাম বসু । অরবিন্দ ঘোষ,বারীন্দ্র ঘোষ এবং তাদের সহযোগীদের কাজকর্মে পুলিশের সন্দেহ হতে থাকে ।
কলকাতা পুলিশ কিংসফোর্ডের জীবন বাঁচানোর জন্যে খুব সচেষ্ট হয়ে ওঠে । কমিশনার এফ এল হলিডে মুজাফ্ফরপুর পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্টের উপেক্ষার বদলে সতর্ক হয়েছিলেন । যাইহোক, চারজন লোককে ম্যাজিস্ট্রেটের বাড়ি পাহারা দেওয়ার জন্যে ব্যবস্থা করা হয় ।
ইতিমধ্যে ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকি নতুন নাম ধারণ করে যথাক্রমে হরেণ সরকার ও দীনেশ চন্দ্র রায় হয়েছেন, এবং কিশোরীমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত এক দাতব্য সরাইখানায় (ধর্মশালা) তারা বাসা নিয়ে আশ্রয় নেন । তাদের অজ্ঞাতবাসের দিনগুলোতে ওই বিপ্লবীদ্বয় তাদের লক্ষ্যের কার্যকলাপ এবং দৈনন্দিন রুটিনের ওপর নজরদারি করতেন । দুই বিপ্লবী সফলভাবে তিন সপ্তাহের ওপর তাদের পরিচয় গোপন রাখতে পেরেছিল । মুজাফ্ফরপুরে সুপারিন্টেন্ডেন্ট আর্মস্ট্রঙের কাছ থেকে একটা চিঠি নিয়ে সিআইডি অফিসার কলকাতায় ফিরে এসেছিল, যেখানে বলা হয়েছিল যে, বিপ্লবীদ্বয় এখানে পৌঁছায়নি ।
৩০ শে এপ্রিল সন্ধ্যায় ক্ষুদিরাম বসু এবং প্রফুল্ল চাকি তাদের পরিকল্পনা কার্যকর করার জন্যে নির্দিষ্ট জায়গামতো হাজির হয়েছিল । স্কুল ছাত্রের ভান করে মুজাফরপুর পার্কে তারা সমীক্ষা করেছিলেন যে, ব্রিটিশ ক্লাবের উল্টো দিকে, যেখানে কিংসফোর্ড ঘনঘন আসেন । একজন কনস্টেবল তাদের দেখেছিল ।
প্রিঙ্গল কেনেডি নামে একজন ব্রিটিশ ব্যারিস্টারের মেয়ে এবং স্ত্রীর সঙ্গে কিংসফোর্ড এবং তার স্ত্রী ব্রিজ খেলছিলেন । তারা রাত ৮.৩০ নাগাদ বাড়ি ফিরবে বলে মনস্থ করেন । কিংসফোর্ড এবং তার স্ত্রী একটা গাড়িতে ছিলেন যেটা কেনেডি এবং তার পরিবারের গাড়ির মতোই দেখতে ছিল । কেনেডি মহিলাগণ কিংসফোর্ডের বাড়ির চত্বর থেকেই যাচ্ছিলেন । যখন তাদের গাড়ি ওই চত্বরের পূর্ব ফটকে পৌঁছায়, ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকি গাড়িটার দিকে দৌড়ে যান এবং গাড়িতে বোমা ছোড়েন । একট প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে এবং গাড়িটা সঙ্গে সঙ্গে ছত্রভঙ্গ হয়ে গিয়েছিল এবং কেনেডি মহিলাগণ ভীষণভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন । মিস কেনেডি এক ঘণ্টার মধ্যেই মারা যান এবং মিসেস কেনেডি গুরুতর আঘাতের ফলে ২ রা মে প্রয়াত হন ।
ক্ষুদিরাম বসু এবং প্রফুল্ল চাকি নিজেদের রাস্তায় পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছিলেন । মাঝ রাত্রিরের মধ্যে সারা শহর ঘটনাটা জেনে গিয়েছিল খবর ছড়িয়ে পড়লো চারিদিকে এবং খুব সকাল থেকেই সমস্ত রাস্তায় পুলিশের টহল শুরু হলো সমস্ত রেল স্টেশনগুলোতে পুলিশের নজরদারি শুরু হলো ।
প্রফুল্ল প্রায় চল্লিশ মাইল দূরবর্তী সমস্তিপুরের দিকে দৌড়ে গিয়েছিলেন আর অন্যদিকে ক্ষুদিরাম চলে গিয়েছিলেন ওয়াইনি স্টেশনের দিকে । ওয়াইনি পৌছে ক্ষুদিরাম ধরা পড়লেন দুই কনেস্টেবল ফতে সিং আর শিবপ্রসাদ মিশ্রর হাতে ।
প্রফুল্ল নিরাপদেই সমস্তিপুর রেল কোয়ার্টারের পাশে এসে দাঁড়ালেন । যেন কিছুই হয়নি এমন ভান করে হেঁটে চললেন স্টেশনের দিকে । এমন সময় বাধা দিলেন এক সুপুরুষ বাঙালি যুবক প্রফুল্ল কে বারণ করলেন এখন স্টেশনের দিকে যেতে । বাঙালি যুবকের আগ্রহ দেখে কেমন সন্দেহ হল প্রফুল্ল চাকির । ভদ্রলােক বললেন এখন আপনি আমার সঙ্গে আসুন । সময় হলেই আমি আপনাকে ট্রেনে তুলে দিয়ে আসব । অচেনা যুবকের আগ্রহ লক্ষ্য করে সতর্ক হলেন প্রফুল্ল পকেটে রাখা পিস্তলে হাত রাখলেন তিনি । যুবকের সহজ সরল আন্তরিকতাকে উপেক্ষা করতে পারেননি প্রফুল্ল । অচেনা যুবকটি মুখে কোনো কৌতুহল প্রকাশ করলেন না । তিনি প্রফুল্লর আসল পরিচয় বুঝতে পেরেছিলেন ।একজন- বাঙালী হিসেবে কর্তব্যজ্ঞানে মুক্তিকামী প্রফুল্লকে সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন । ওই ভদ্রলােক নতুন কাপড় ও জুতা কিনে এনে দিলেন প্রফুল্লকে । তার পোষাকে চারিদিকে ধুলাে মালার লেগে ছিলো পুলিশের সন্দেহ হবে তাই প্রথম প্রফুল্লর পােষাক পরিচ্ছদ একেবারে পাল্টে দিলেন । নিজের আস্তানাতে প্রফুল্লকে সারাদিন রেখে দিলেন । সন্ধ্যার পর সব দিক দেখে সতর্কভাবে প্রফুল্লকে পৌঁছে দিলেন স্টেশনে । একান্ত আপনজনের মতো প্রচুর শুভ কামনা করেন । দেশপ্রেমিককে যে ভালবাসে সাহায্য করে সে যে নিজেও একজন দেশপ্রেমিক স্বাধীনতার পূজারী তাতে আর সন্দেহ কি । পরে এই দেশপ্রেমিক যুবকের পরিচয় জানা গিয়েছিল তার নাম ত্রিগুণাচরন ঘোষ ।
সেদিন যদি ওই ভদ্রলােক নিজের থেকে প্রফুল্লকে সাহায্য না করতেন তা হলে হয়তাে প্রফুল্ল আগেই ধরা পড়ে যেতেন ।
১৯০৮ সালের ২ রা মে প্ল্যাটফর্মে তখন কলকাতার ট্রেনের জন্য মানুষের ভিড় জমেছে । প্রফুল্ল মােকামঘাটের একটা টিকিট কিনলেন । প্ল্যাটফর্মের এককোণে গিয়ে বেঞ্চে বসে পড়লেন । মনের ভেতর নানা প্রশ্ন ক্ষুদিরামের অবস্থা কী তিনি জানেন না । সেদিন প্ল্যাটফর্মে উপস্থিত ছিলেন সিংভূমের কুখ্যাত পুলিশ সাব ইন্সপেক্টায় নন্দলাল ব্যানাজী । ছুটি কাটানোর পর আবার কর্মস্থলে ফিরে যাচ্ছিলেন ।প্রফুল্লর পায়ে নতুন জুতাে দেখে কেমন যেন সন্দেহ হল নন্দলালের । এগিয়ে এসে প্রফুল্লর সঙ্গে আলাপ জমাবার চেষ্টা করলেন । কথায় কথায় বিপ্লবীদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করলেন । নন্দলালের অাচরণ দেখে প্রফুল্ল সন্দেহ করতে পারলেন না ।কথা বলতে ভালো সাগছে না , তবুও কথা বলতে হচ্ছে । নন্দলাল ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলেন সুদক্ষ পুলিশ অফিসার পেটের কথা আদায় করতে জানেন । তিনি বললেন যে , ভাের রাতে শহরের ব্যারিস্টার কেনেডি সাহেবের গাড়িতে বােমা ছোড়া হয়েছে ।মিসেস এবং মিস কেনেডি মারা গেছেন । খবরটা কানে যেতেই চমকে উঠলেন প্রফুল্ল । হায় , আমাদের এত দিনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হল ! তার মানে ? কিংসফোর্ড মারা যাননি । আমরা দুই অসহায় নিরাপরাধ নারীকে হত্যা করেছি । প্রফুল্লর এই ভাবান্তর চোখ এড়ায়নি নন্দলালের । সন্দেহ ঘনীভূতত হলো । তিনি জানেন একজন অততাই ধরা পড়েছে অন্যজন অধরা এই সেই আততাই । সরকার বাহাদুরের কাছে মোটা টাকার লোভে তাকে ধরার চেষ্টা করলেন । তার হাবভাব ভালো না দেখে প্রফুল্ল চেষ্টা করছে দূরে চলে যাবার কিন্তু প্রফুল্লকে বিভিন্ন ভাবে আটকে রাখলেন । গাড়ি এলো দুজনে একি কামরায় উঠলো প্রফুল্ল পাশের কামরায় যেতে চাইলে নন্দলাল তাকে ছাড়লো না ।
কিছু সময়ের মধ্যে প্রফুল্লকে গ্রেপ্তারের অনুমতি নিয়ে গ্রেপ্তার করতে গেলে প্রফুল্ল তাকে বলেছিলেন “ ছিঃ এই আপনার কাজ একজন বাঙালি হয়ে আরেক বাঙালিকে ধরিয়ে দিচ্ছেন ”।
এরপর প্রফুল্ল পালাবার চেষ্টা করে শেষ কামরায় ধরা পড়ে নিজের রিভালবার বের করে নিজের কপালে গুলি ছুড়লেন । প্লাটফর্মে লুটিয়ে পড়ল নিথর দেহ প্রফুল্ল নিজের প্রাণ দিয়ে প্রমাণ করে গেলোন যে, বিপ্লবীরা কখনোই মারতে ও মরতে ভয় পায় না ।
প্রফুল্লর গুলিবিদ্ধ দেহটা মুজাফ্ফরপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হল । ক্ষুদিরাম দেখেই চিনতে পারলেন ।এরপর ব্রিটিশ সরকার এক পৈশাচিক কাজ করেছিলেন তারা মৃতদেহ থেকে মুন্ডু আলাদা করে কেটে কলকাতায় পাঠিয়ে দেয় ।
ইতিমধ্যে নন্দলাল সরকারি ইনাম পেয়েছেন চাকরিতে পদোন্নতি হয়েছে । একদিন রাত আটটা বাজে হাতে এক গোছা চিঠি নিয়ে নন্দলাল চলেছে সারপেনটাইন লেন ধরে । পেছন থেকে ডাক শোনা যায় দাড়াও নন্দলাল পেছন ফিরে তাকালেন অপরিচিত তরুণদের দেখে বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন কী চাই তােমাদের ? তোমাকে পুরস্কার দিতে চাই । তিনটি গুলির শব্দ , নদলালোর মৃতদেহ পড়ে রইল পথের ওপরে । সেদিন এই পুরস্কারের ব্যবস্থা যিনি করেছিলেন , তিনি হলেন দুর্ধর্ষ বিপ্লবী নেতা শ্রীশ পাল আর তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিপ্লবী রণেন গাঙ্গুলী।
আজ এই মহান বীর বিপ্লবী শহীদ প্রফুল্ল চাকীর ১৩৪ তম জন্মদিনে আমার শ্রদ্ধা ও প্রণাম..
ও
মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারীর ১৪৭ তম জন্মদিনে আমার শ্রদ্ধা ও প্রণাম.......
চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী ১৮৭৪ সালের ১০ ই ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন । তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারি ছিলেন ।
তিনি হলেন বিশিষ্ট ভারতীয় আইনজীবী, স্বাধীনতা সংগ্রামী, রাজনীতিবিদ,ইতিহাসবিদ, সুলেখক এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম নেতা । তিনি ছিলেন ভারতবর্ষের সর্বশেষ গভর্নর জেনারেল। তিনি তামিলনাড়ু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তিনি স্বতন্ত্র পার্টির প্রতিষ্ঠাতা । তিনি ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক ভারত রত্ন পেয়েছিলেন । ১৯৭২ সালের ২৫ শে ডিসেম্বর প্রয়াত হন ।

ব্যবত্তারহাট, নন্দকুমার,পূর্ব মেদিনীপুর
🙏 যদি আপনি আপনার গ্রাম বা শহরকে ভালোবেসে থাকেন, তাহলে আপনিও পাঠাতে পারেন আপনার এলাকার তথ্য আমাদের কাছে।
নীচের লিংকে ক্লিক করে যোগ দেন আমাদের সাথে, তথ্য পাঠান হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের এডমিন দের কাছে, আপনার তথ্যটি বিবেচনা করে সর্বসমক্ষে প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পেজ ও গ্রুপে।💐
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সংযুক্ত হতে চাইলে এই লেখার উপর ক্লিক করুন 👈⬇️🔽⬇️🔽⬇️🔽⬇️🔽⬇️
আমাদের 👨💻 ওয়েবসাইটের ঠিকানা 👇
https://www.MEDINIKOTHA.in
আমাদের 🎦 ইউটিউবের ঠিকানা 👇
https://www.youtube.com/c/MEDINIKOTHA
আমাদের 🖼️ ইনস্টাগ্রামের ঠিকানা 👇
https://www.instagram.com/medinikotha
আমাদের 🤳 ফেসবুক গ্রুপের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/groups/medinikotha
আমাদের 🚻 ফেসবুক গ্রুপ কাঁথি মহকুমা ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/groups/contaigroup
আমাদের 🚀 টেলিগ্রাম গ্রুপের ঠিকানা 👇
http://t.me/medinikotha
আমাদের ✈️ টেলিগ্রাম চ্যানেলের ঠিকানা 👇
https://t.me/medinikatha
আমাদের 📧 ই-মেইল ঠিকানা 👇
medinikotha.contai@gmail.com
আমাদের 🗃️ কাঁথি পেজের ঠিকানা 👇 https://www.facebook.com/ContaiSubdivision
আমাদের 📖 দীঘা পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/DighaOldNew
আমাদের 📝 এগরা পেজের ঠিকানা👇
https://www.facebook.com/Egra2
আমাদের 📒 রামনগর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Ramnagar4
আমাদের 📔 হেঁড়িয়া পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Henria
আমাদের 📕 খেজুরী পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Khejuree
আমাদের 📙 নাচিন্দা পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/NachindaMa
আমাদের 📙 তাজপুর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Tajpoor
আমাদের 📓 শংকরপুর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Sankarpoor
আমাদের 📃 সাতমাইল পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Satmile
আমাদের 📄 পেটুয়াঘাট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Petuaghat
আমাদের 🗒️ দেউলীহাট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Medinikotha6
আমাদের 📘 জুনপুট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Junput2
আমাদের 📗 বাঁকিপুট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Bakiput
আমাদের 📚 মান্দারমনি পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Mandarmanee
আমাদের 🛰️ ওয়েবসাইট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/medinikotha.in
