মেদিনীকথার উৎসর্গ শহীদ কানাইলাল দত্ত।

ফাইল চিত্র,

শহীদ কানাইলাল দত্ত

ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে কানাইলাল দত্ত একজন অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বীর বিপ্লবী ছিলেন । আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের মধ্যে বিপ্লবীদের বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হওয়া নরেন্দ্রনাথ গোস্বামীকে হত্যা করার অপরাধে তার ফাঁসি হয় । এমনসব বিশ্বাসঘাতকদের গলা টিপে মারতেই জন্ম নিয়েছিলেন ভারত মাতার এই সুপুত্র কানাইলাল দত্ত । যিনি মাত্র ২০ বছর বয়সে দেশের জন্য ফাঁসিতে ঝুলেছিলেন । 

জন্ম:
৩১ শে আগস্ট ১৮৮৮ সাল,চন্দননগর, হুগলী

পিতা:-  চুনীলাল দত্ত
মাতা:-  ব্রজেশ্বরী দেবী

আত্মবলিদান :
১০ ই নভেম্বর ১৯০৮ সাল

কানাইলাল দত্ত ১২৯৫ বঙ্গাব্দে ইংরেজির ১৮৮৮ সালের ৩১ শে আগস্ট, জন্মাষ্টমী তিথিতে চন্দননগরে জন্মগ্রহণ করেন । তার পিতার নাম চুনীলাল দত্ত ও মাতার নাম ব্রজেশ্বরী দেবী । পিতা বোম্বাইতে হিসাবরক্ষকের কাজ করতেন । কানাইলাল শৈশব কাটে বোম্বাইয়ে বোম্বাইয়ের গিরগাঁও এরিয়ান এডুকেশন সোসাইটি স্কুলে ভর্তি হলেন, স্কুলের মধ্যে পড়াশোনা খুব একটা তার ভাল লাগত না । ত্রিপুরা তিনি প্রায়ই স্কুল থেকে পালানোর চেষ্টা করতেন । 
পরবর্তী সময়ে চন্দননগর ডুপ্লে বিদ্যামন্দিরে ভর্তি হলেন কানাইলাল । এই বিদ্যামন্দিরে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শুরু হলে কানাইলালের চারিত্রিক পরিবর্তন ঘটে । তার খামখেয়ালিপনা স্বভাব  ছেড়ে অনেকটা শান্ত হয়ে উঠলো । বন্ধু বান্ধবদের সাথে সময় না কাটিয়ে দেশিরভাগ সময় গ্রন্থাগারে কাটাত । বিভিন্ন লেখক দের রচনা মনদিয়ে পড়ত সাথে সাথে ভারতের ইতিহাস পড়ত খুব আগ্রহের সাথে ।

প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করবার পরে এলেন হুগলি মহসীন কলেজ । এই কলেজে ছাত্র হিসাবে তিনি যথেষ্ট কৃতিত্বের পরিচয় দিয়ে বি.এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন । কিন্তু বিপ্লব ও রাজদ্রোহিতার অভিযোগে কারারুদ্ধ হওয়ায় ইংরেজ সরকার তাকে ডিগ্রি প্রদানে বাধা দেয়, কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সে বাধা উপেক্ষা করে তাকে ডিগ্রি  প্রদান করে ।

কলকাতায় চাকরি করতে যাচ্ছেন ৷ এই একটি মিথ্যা কথা বলেছিলেন তিনিতাঁর নিজের মাকে ৷ তখন দেশে উত্তাল সময় স্বদেশী আন্দোলন চলছে ৷ ছাড়া ভারতবর্ষজুড়ে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন শুরু হয়েছে, আন্দোলনের তরঙ্গ  ছড়িয়ে পড়লে চন্দননগরেও ।ব্রিটিশ শাসন থেকে দেশমাতাকে মুক্তি দিতে বদ্ধপরিকর একদল যুবক ৷ তাঁদেরই একজন ঠিক করলেন কলকাতায় যাবেন, দেশের কাজে ৷ কিন্তু বাড়িতে কি সত্যি বলা যায় ? প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে যে ৷ মা তো কলকাতায় যেতে দেবেন না তাহলে উপায় কি কিন্তু দেশমাতা যে আগে তাই প্রথম বার মিথ্যা বলা, চাকরির ছুতো নিয়ে সেই সূত্র ধরেই দেশের কাজে বিশ্বাসঘাতককে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনায় সামিল হন চন্দননগরের এই বীর যুবক কানাইলাল দত্ত ৷ 
চন্দননগরের ডুপ্লে কলেজের অধ্যক্ষ তথা যুগান্তর পত্রিকার পরিচালক  চারুচন্দ্র রায়ের কাছে কানাইলাল বিপ্লবমন্ত্রে দীক্ষা নেন এবং অস্ত্রচালনার শিক্ষা করেন । কানাই কলকাতার গুপ্ত বিপ্লবী দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগ স্থাপিন করেলেন, কানাই বিপ্লবী জীবন শুরু করলেন নানা অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন এবং দায়িত্বের সঙ্গে সমস্ত কার্যভার পালন করতে শুরু করলেন । স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কানাইলাল দত্ত সকল নেতাদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় হয়ে উঠলো । মন্ত্র গুপ্তি শপথ কখনোই তিনি ভাঙেননি । তার উপর বিশ্বাস করে যে কোনো গোপন কাজের দায়িত্ব অর্পণ করা যেত । কানাই সারারাত জেগে লিফটের লিখতেন এবং সেই লিফলেট বিভিন্ন জায়গায় বিলি করতেন । খুব সাহসিকতা নিয়ে কাজ করত কারণ এই কাজ খুবই কঠিন ছিল যেকোন মুহূর্তে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ভয় ছিল, তিনি খুব সহজে ছিলেন সমস্ত ভয় কে উপেক্ষা করেই তিনি লিফলেট পৌঁছে দিতেন বিপ্লবীদের কাছে তিনি জানতেন খবর পৌঁছে দিতে না পারলে আন্দোলন সংগঠিত করা যাবে না ।

চন্দননগরে নিজের চেষ্টায় অনেকগুলি বিপ্লবী সমিতি গড়ে তুলেছিলেন । বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় চাকরিচ্যুত বাঙালি কেরাণীদের জন্য স্বদেশী সাহায্যভাণ্ডার গড়ে তোলেন । বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর সাথে ছাত্রাবস্থাতেই ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল তার । বি.এ. পরীক্ষা দিয়ে কলকাতার বিপ্লবী দলের কার্যকলাপে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন । কিংসফোর্ডকে হত্যা করার জন্য তিনি প্রথমে মনোনীত হয়েছিলেন ।
এ প্রসঙ্গে মতিলাল রায় লিখেছেন -

গঙ্গাতীরে পদচারণা করিতে-করিতে কানাইলাল আমায় জানাইল-. তাহার ডাক আসিয়াছে, তাহাকে বাড়ী ছাড়িতে হইবে ।  আমি সবিস্ময়ে তাহার মুখের দিকে চাহিলাম । দীর্ঘ নাসিকা দুটি ওষ্ঠপুটের ফাঁকে হাসির জ্যোৎস্না ঠিকরাইয়া বাহির হইতেছে ।কানাইলাল স্মিতমুখে বলিল “উপস্থিত কলিকাতায় যাইব । পি-এম. করার খাঁটী লােকের অভাব হইয়াছে ।...আমি প্রাণের চেয়ে পি.এম্. যাহাতে কার্য্যকর হয়, সেই দিকেই বিপ্লবীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করিব ।"

কিংসফোর্ড হত্যার চেষ্টায় কানাইলালের পরিবর্তে প্রফুল্ল চাকীর সঙ্গে ক্ষুদিরাম বসু মজঃফরপুর যাত্রা করেন । তখন কানাইলাল,বারীন ঘোষের দলের সঙ্গে কলকাতায় বোমা তৈরির কাজে যোগ দেন । ১৯০৮ সালের ২ মে তিনি উত্তর কলকাতার ১৫ নম্বর গোপীমোহন দত্ত লেন থেকে মানিকতলা বোমা মামলায় অস্ত্র আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন ।

ভারত মাতার এই বীরপুত্র সেই সময় বিশ্বাসঘাতকদের জন্য আতঙ্ক হয়ে উঠেছিলেন । একদিকে যখন ইংরেজরা ভারতকে লুটেপুটে খেতে ব্যাস্ত তখন ভারতেরই কিছু লোকজন ইংরেজদের পা চেটে দেশবিরোধী কাজে মেতে উঠেছিল । ভারতে যখন স্বাধীনতা সাংগ্রামীরা নিজেদের সম্পূর্ণ শক্তি লাগিয়ে ইংরেজদের তাড়ানোর চেষ্টা করছিল তখন কিছু লোভী, বিশ্বাসঘাতক মানুষ বিপ্লবীদের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল । সেইরকম এক ব্যক্তি ছিলেন নরেন্দ্রনাথ গোস্বামী ওরফে নরেন গোঁসাই ।
কানাইলাল দত্ত রাজসাক্ষী নরেন্দ্রনাথ গোস্বামী ওরফে নরেন গোঁসাইকে হত্যা করতে মনস্থির করেন । এইসময় নরেন গোঁসাইকে পুলিশ কড়া নিরাপত্তায় জেলের ভেতরে রেখেছিল ।

ওই সময়েই কিংসফোর্ড হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় বেশকিছু স্বাধীনতা সাংগ্রামীকে । কানাইলাল দত্ত ছিলেন গ্রেফতার হওয়া বন্দিদের মধ্যে অন্যতম এক বিপ্লবী । আলিপুর বোমা মামলার ইস্যু তখন সংবাদ মাধ্যমে ছেয়ে গেছে, দেশের প্রান্তে প্রান্তে স্বাধীনতার জন্য বিপ্লব শীর্ষে পৌঁছাতে শুরু করেছে ।
এমন পরিস্থিতিতে আলিপুর বোমা মামলায় রাজসাক্ষী হয়েছিলেন নরেন্দ্রনাথ গোস্বামী । বিশ্বাসঘাতককে শেষ করতে হবে এই পন নিলেন কানাইলাল দত্ত । কানাইলাল দত্ত  সত্যেন্দ্রনাথের কাছে এসে গোপনে সত্যতা কাছ থেকে সব শুনলেন, কানাইলাল সত্যেন্দ্রনাথ কে বললো তাদের দলে তাকে রাখতে হবে কারণ নরেন কে মারার পর্ন
কানাইলাল করেছেন । সত্যেন্দ্রনাথ রাজি হলো না তাকে তাদের দলে নিতে অনেক বোঝাবার চেষ্টা করেন । সত্যেন মনে মনে ভাবতে থাকে ক্ষুদিরাম চলে গেছে প্রফুল্ল চাকী ও চলে গেছে কানাই যা জেদ করছে এবার কি কানের যাবার পালা কারণ এই কাজে প্রাণের সংশয় আছে কিন্তু কানাইলাল নাছোড়বান্দা সে ছাড়বার পাত্র নয় । শেষমেষ সত্যেন কে রাজি হতে হল এবং তাকে সঙ্গে নিতে হলো ।
সত্যেন্দ্রনাথ কানাইকে জানালো পহলা সেপ্টেম্বর মামলার তারিখ ওইদিনই ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নরেন বিবৃতি দেবেন, ওইদিনই ওকে শেষ করতে হবে বিবৃতি দিতে দেওয়া যাবে না ।
গোপনে সত্যেন্দ্রনাথের কাছে  পিস্তল পৌঁছে দিলেন মতিলাল রায় । 
বিপ্লবী শ্রীশচন্দ্র ঘোষ চাতুর্যের সাথে তাকে একটি রিভলভার যোগাড় করে কানিয়ের কাছে পৌঁছে দেন । কানাই খুবই খুশি কিন্তু নরেন কে কোথায় পাবেন সেই চিন্তা করছেন, নরেন তখন ইউরোপিয়ান ওয়ার্ডে রয়েছে একেবারে জামাই আদরে ।  পহরের দায়িত্বে রয়েছেন হিগিনস । এখানেই কাজ ফিনিশ করতে হবে । হাতে অস্ত্র এসে গেছে সুন্দর পরিকল্পনা করে এখানেই কাজ শেষ করতে হবে । সত্যেন রাজি হল রাজসাক্ষী দেওয়ার এবং সেটি গোপনে নরেনের কাছে খবরটি পৌঁছে দিলেন ।পুলিশ কর্তৃপক্ষ সত্যেনের এই আর্জি মঞ্জুর করল । সত্যেন এলো নরেনের কাছে একই ওয়ার্ডে । সত্যেন আর নরেনের  ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব তৈরি হয় । এমন সময় সত্যেন দুর্বল স্মৃতি শক্তির অভিনয় করতে থাকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, হাসপাতালে প্রতিদিনই দেখতে আসেন নরেন । সত্যেন ইংরেজদের জানায় তিনি লিখিতভাবে জবানবন্দি দেবেন সেই আর্জি ইংরেজ প্রশাসক মঞ্জুর করেন লিখিত আবেদন অগ্রাহ্য করবেন, যত ভুলভাল কিছু না লিখে তাই নরেন সেখানে উপস্থিত থাকবেন পরিকল্পনা করলেন ।
সত্যেন কানাইয়ের কাছে গোপন খবর পৌঁছে দেন ৩১ শে আগস্ট ডিসপেন্সারিতে সত্যেন আর নরেন থাকবেন ওখানেই নরেন কে শেষ করতে হবে । সত্যেন আর নরেন দুজনের ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে ডিসপেনসারির দিকে যাচ্ছেন কানাই দাঁত মাজার অছিলায় ডিসপেনসারির কাছাকাছি ওয়েট করছিল । কানাই খাড়া রাখছিলেন ডিসপেনসারি ঘরের মধ্যে কি কথাবার্তা হচ্ছে এমন সময় একটি গুলির আওয়াজ এল সত্যের নরেনের উপর গুলি চালালে নরেনের পায়ে গুলি লাগে নরেন ছিটকে বাইরে বেরিয়ে চলে আসে । নরেনের আর্তনাদ শুনে হিগিনস শত্রুকে ধরার জন্য ছুটে আসি আর বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন কানাই  বিশ্বাসঘাতক নরেন গোঁসাই ছুটে পালাবার চেষ্টা করলেই  অপর বিপ্লবী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সহযোগিতায় জেলের ভেতরেই নরেন কে গুলি করে হত্যা করেন কানাইলাল অপরদিকে হিগিনস যখন সত্যেনকে  ধরতে যায় সত্যেনের গুলিতে বিদ্ধ হয় হিগিনস । অপরদিকে পুলিশি প্রহরীদের সঙ্গে কানাইয়ের গুলির লড়াই চলে । কানাই সর্বমোট নটি গুলি ছোড়েন । জেলের ঘন্টি বেজে উঠলে সত্যেনকে ও কানাইকে বন্দি করা হয় 
৩১ আগস্ট ১৯০৮ সালে নরেনের হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে আসেন কানাই ও সত্যেন কানাই সমস্ত দোষ নিজের মাথায় নিয়ে নেয় তিনি বলেন সত্যেন নির্দোষ সমস্ত গুলি আমি চালিয়েছি ।
আদালতে কানাইলালকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে উনি কিভাবে পিস্তল পেলেন? উত্তর ছিল ক্ষুদিরামের আত্মা পৌঁছে দিয়েছে । 

বিচারে তাঁর ফাঁসির সাজা ঘোষণা করা হয় ।
তিনি দণ্ড রোধের জন্যে উচ্চতর আদালতে আপিল করার দৃঢ় বিরোধিতা করেছিলেন, তাই আবেদন করা হয়নি । ১৯০৮ সালে ১০ নভেম্বর, তারিখে ফাঁসিতে মৃত্যুবরণ করেন । হাসিমুখে ফাঁসির মঞ্চে গিয়ে কানাইলাল বলেছিলেন - কালো কাপড় মুখে না পরাতে ।
অপর বিপ্লবী সত্যেন বসুও ফাঁসির মঞ্চে শহীদ হন ।

শৈশব থেকেই কানাইলালের শারীরিক অসুস্থতা কিছু বেশিই ছিল । কিন্তু ফাঁসির আগে তার ওজন বেড়ে গিয়েছিল প্রায় ষোলো পাউন্ড এবং তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন । এ প্রসঙ্গে উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তার "নির্ব্বাসিতের আত্মকথা" গ্রন্থে লিখেছেন -

"জীবনে অনেক সাধুসন্ন্যাসী দেখিয়াছি ; কানাইএর মত এমন প্ৰশান্ত মুখচ্ছবি আর বড় একটা দেখি নাই । সে মুখে চিন্তার রেখা নাই, বিষাদের ছায়া নাই, চাঞ্চল্যের লেশ মাত্র নাই - প্ৰফুল্ল কমলের মত তাহা যেন আপনার আনন্দে আপনি ফুটিয়া রহিয়াছে । চিত্ৰকূটে ঘুরিবার সময় এক সাধুর কাছে শুনিয়াছিলাম যে, জীবন ও মৃত্যু যাহার কাছে তুল্যমূল্য হইয়া গিয়াছে সেই পরমহংস কানাইকে দেখিয়া সেই কথা মনে পড়িয়া গেল । জগতে যাহা সনাতন, যাহা সত্য, তাহাই যেন কোন শুভ মুহূৰ্ত্তে আসিয়া তাহার কাছে ধরা দিয়াছে । আর এই জেল, প্রহরী, ফাঁসিকাঠ, সবটাই মিথ্যা, সবটাই স্বপ্ন ! প্রহরীর নিকট শুনিলাম ফাঁসির আদেশ শুনিবার পর তাহার ওজন ১৬ পাউণ্ড বাড়িয়া গিয়াছে ! ঘুরিয়া ফিরিয়া শুধু এই কথাই মনে হইতে লাগিল যে, চিত্তবৃত্তিনিরোধের এমন পথও আছে যাহা পতঞ্জলিও বাহির করিয়া যান নাই । ভগবানও অনন্ত, আর মানুষের মধ্যে তাঁহার লীলাও অনন্ত !

তাহার পর একদিন প্ৰভাতে কানাইলালের ফাঁসি হইয়া গেল । ইংরাজ শাসিত ভারতে তাহার স্থান হইল না, না হইবারই কথা ! কিন্তু ফাঁসির সময় তাহার নির্ভীক, প্ৰশান্ত ও হাস্যময় মুখশ্ৰী দেখিয়া জেলের কর্তৃপক্ষরা বেশ একটু ভ্যাবাচাকা হইয়া গেলেন। একজন ইউরোপীয় প্রহরী আসিয়া চুপি চুপি বারীনকে জিজ্ঞাসা করিল— “তােমাদের হাতে এ রকম ছেলে আর কতগুলি আছে?” যে উন্মত্ত জনসঙ্ঘ কালীঘাটের শ্মশানে কানাইলালের চিতার উপর পুষ্প, বর্ষণ করিতে ছুটিয়া আসিল, তাহারাই প্রমাণ করিয়া দিল যে, কানাইলাল মরিয়াও মরে নাই ।"
কানাইলাল যখন কারাগারে তাঁর মা তাঁর সাথে দেখা করতে এলেন কানাইলাল মাকে বলেছিলেন -“ এতো দিন তুমি আমার মা ছিলে । আজ তুমি সারা বাংলাদেশের মা হলে । এ কি কম ভাগ্যের কথা। ”

কানাইলাল দত্তের শবদেহ যখন বাইরে আসে তখন চারিদিক থেকে চলে আসে মানুষের ঢল। শবদেহ থাকা ঘাটটি ছুঁয়ে পেতে শুরু হয়ে যায় ধাক্কাধাক্কি, যেন ভগবানের দর্শন পেতে ব্যাকুল জনগণ। জয় কানাই, জয় কানাই ধ্বনিতে আন্দোলিত হয়ে উঠে সর্বত্র, শেষকার্য সম্পন্ন হলে চিতাভস্ম কেনার জন্য লাইন পড়ে যায়। আজ কানাইলাল দত্তের জন্মদিন। ভারত মাতার এই বীর সন্তানকে জানাই কোটি কোটি প্রণাম।


ক্ষুদিরাম বসুর পরে তিনিই ফাঁসিমঞ্চে প্রাণ উৎসর্গ করা প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামী শহীদ। তার কর্ম ও বীরোচিত মৃত্যু সমগ্র জাতিকে উদ্ধুদ্ধ করে।
✍️ সন্দীপ চক্রবর্ত্তী
ব্যবত্তারহাট, নন্দকুমার,পূর্ব মেদিনীপুর

🙏 যদি আপনি আপনার গ্রাম বা শহরকে ভালোবেসে থাকেন, তাহলে আপনিও পাঠাতে পারেন আপনার এলাকার তথ্য আমাদের কাছে।
নীচের লিংকে ক্লিক করে যোগ দেন আমাদের সাথে, তথ্য পাঠান হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের এডমিন দের কাছে, আপনার তথ্যটি বিবেচনা করে সর্বসমক্ষে প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পেজ ও গ্রুপে।💐

আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সংযুক্ত হতে চাইলে এই লেখার উপর ক্লিক করুন 👈⬇️🔽⬇️🔽⬇️🔽⬇️🔽⬇️
আমাদের 👨‍💻 ওয়েবসাইটের ঠিকানা 👇
https://www.MEDINIKOTHA.in
আমাদের 🎦 ইউটিউবের ঠিকানা 👇
https://www.youtube.com/c/MEDINIKOTHA
আমাদের 🖼️ ইনস্টাগ্রামের ঠিকানা 👇
https://www.instagram.com/medinikotha
আমাদের 🤳 ফেসবুক গ্রুপের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/groups/medinikotha
আমাদের 🚻 ফেসবুক গ্রুপ কাঁথি মহকুমা ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/groups/contaigroup
আমাদের 🚀 টেলিগ্রাম গ্রুপের ঠিকানা 👇
http://t.me/medinikotha
আমাদের ✈️ টেলিগ্রাম চ্যানেলের ঠিকানা 👇
https://t.me/medinikatha
আমাদের 📧 ই-মেইল ঠিকানা 👇
medinikotha.contai@gmail.com
আমাদের 🗃️ কাঁথি পেজের ঠিকানা 👇 https://www.facebook.com/ContaiSubdivision
আমাদের 📖 দীঘা পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/DighaOldNew
আমাদের 📝 এগরা পেজের ঠিকানা👇
https://www.facebook.com/Egra2
আমাদের 📒 রামনগর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Ramnagar4
আমাদের 📔 হেঁড়িয়া পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Henria
আমাদের 📕 খেজুরী পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Khejuree
আমাদের 📙 নাচিন্দা পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/NachindaMa
আমাদের 📙 তাজপুর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Tajpoor
আমাদের 📓 শংকরপুর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Sankarpoor
আমাদের 📃 সাতমাইল পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Satmile
আমাদের 📄 পেটুয়াঘাট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Petuaghat
আমাদের 🗒️ দেউলীহাট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Medinikotha6
আমাদের 📘 জুনপুট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Junput2
আমাদের 📗 বাঁকিপুট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Bakiput
আমাদের 📚 মান্দারমনি পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Mandarmanee
আমাদের 🛰️ ওয়েবসাইট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/medinikotha.in

Social Share

অনুসন্ধান !!

এখনকার খবর !!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *