ফাইল চিত্র,
দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের বীর যোদ্ধা, অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলায় (বর্তমানে, তিনটি খন্ড , পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম), এই মহান দেশনায়ক, কৃতি সন্তান, মুকুটহীন সম্রাট 'দেশপ্রাণ' বীরেন্দ্র শাসমল, যিনি আজীবন অন্যায়ের সাথে আপস করেননি আর কারো কাছে কোনোদিন মাথা নত করেননি । ভারতের একমাত্র ব্যক্তি এবং হিন্দু সনাতন ধর্মে একমাত্র দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমলকে দাঁড় করিয়ে দাহ করা হয়েছিলো ।
জন্ম:
২৬ শে অক্টোবর, ১৮৮১ সাল,কাঁথি, পূর্ব মেদিনীপুর ।
প্রয়াণ :
২৪ শে নভেম্বর ১৯৩৪ সাল, কোলকাতা।
অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলায় ১৮৮১ সালের ২৬ শে অক্টবর কাঁথি মহকুমার চাঁদিভেটি গ্রামে এক বিখ্যাত জমিদার পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল । প্রথমে গ্রামের স্কুলে এবং পরে মহকুমা হাইস্কুলে লেখা পড়া শেষ করে, বীরেন্দ্রনাথ কলকাতার তৎকালীন মেট্রোপলিটন কলেজে এফএ ক্লাসে ভর্তি হন । অসম্ভব মেধাবী বীরেন্দ্রনাথ পাঠ্য বিষয়ের বাইরে একাগ্র চিত্তে পড়াশোনা করতেন, দেশ-বিদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের কাহিনী এবং দেশের বিদেশের মনীষীদের জীবনী সহ দেশাত্মবোধের ইতিহাস ।
বীরেন্দ্রনাথ শাসমল ১৯০০ সালে এনট্রান্স পাস করে রিপন কলেজে ভর্তি হন (অধুনা সুরেন্দ্রনাথ আইন কলেজ)। কলেজে পড়াশুনা কালীন রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায়ের বিভিন্ন বক্তৃতা তাকে অনুপ্রাণিত করে । তিনি বুঝেছিলেন যে ব্রিটিশ শক্তির সঙ্গে লড়াই করতে গেলে সুরেন্দ্রনাথের পথেই হাঁটতে হবে । বীরেন্দ্রনাথ বুঝেছিলেন, ইংরেজদের সঙ্গে লড়তে গেলে ওদের আইনটা আগে ভালোভাবে জানতে হবে । তাই তিনি তাঁর মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে, ইংল্যান্ডে আইন পড়তে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন । কিন্তু বাড়িতে রাজি ছিল না কিন্তু পরবর্তীকালে বাড়িতে রাজি হলেও মা দুটি শর্ত আরোপ করেন । তাঁর মায়ের দুটি শর্ত ছিল, এক বিদেশে গিয়ে কোনওদিন খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করতে পারবে না আর দ্বিতীয় শর্ত ছিল কোন মেম সাহেবকে বিয়ে করা যাবে না । মায়ের শর্ত মেনেই ব্যারিস্টার হওয়ার উদ্দেশ্যে বিলেত যাত্রা করেন তিনি ।
মিডল টেম্পল থেকে ১৯০৪ সালে ব্যারিস্টারি পাশ করেন । বিলেত থেকে ফিরে এসে কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন বীরেন্দ্রনাথ শাসমল । খুব অল্প দিনের মধ্যেই ভালো উকিল হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন । চারিদিকে তাঁর নাম যশ ছড়িয়ে পড়েতে থাকে ।
স্বদেশী আন্দোলন করবার অপরাধে বন্দী হওয়া বিপ্লবীদের হয়ে তিনি বিনা পারিশ্রমিকে লড়াই করতেন । কলকাতা হাইকোর্টে ও অন্যান্য জেলার আদালতে স্বদেশী বিপ্লবীদের হয়ে তিনি বিভিন্ন মামলার লড়াই করতেন দক্ষতার সাথে । প্রয়োজনে অনেক স্বদেশীদের আর্থিক সাহায্য তিনি করতেন অকাতরে ।
ওই সময় প্রায়ই গ্রামে-গঞ্জে কলেরা ও বসন্ত রোগের প্রাদুর্ভাব লেগেই থাকত । এছাড়াও বন্যা, খরা, ঝড়ঝঞ্জা প্রভৃতির মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় লেগেই থাকত । সেই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে বারে বারে তিনি ছুটে যেতেন এবং তাদের সবরকম সাহাহ্য সহযোগিতা করতেন । বীরেন্দ্রনাথ শাসমল কোনরকম কুসংস্কারকে কোনদিন প্রশ্রয় দিতেন না । সেবার কার্যের মধ্যে তিনি কোনও জাত পাত ধর্ম বর্ণের ভেদাভেদকে একেবারে স্থান দিতেন না ।
১৯১৩ সাল বিপ্লবের অগ্নিযুগ,সেই সময় মেদিনীপুর ছিল বিপ্লবীদের আঁতুড়ঘর বিপ্লবের পীঠস্থান । ১৯১৩ সালে ইংরেজরা ঠিক করলেন, মেদিনীপুর’কে দুটি ভাগে ভাগ করে বিপ্লবীদের ঐক্য নষ্ট করে তাদের জব্দ করতে । ইংরেজদের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গর্জে উঠল সারা মেদিনীপুর বাসী সহ গর্জে উঠলেন বীরেন্দ্রনাথ শাসমল । শুরু হয় জেলা ভাগের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন । এই সময় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে ওঠায় ইংরেজদের জেলা ভাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেতে বাধ্য হয় । ১৯১৯ সালে ইংরেজরা সিদ্ধান্ত নিল মেদিনীপুর জেলায় ২৩৫ টি ইউনিয়ন বোর্ড তৈরি করবার । ইংরেজ সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণ ছিল, জেলাবাসীর ওপর জুলুম বাজির মাধ্যমে বর্ধিত ট্যাক্স আদায় করা । বীরেন্দ্রনাথে’র নেতৃত্বে তৈরি হয়েছিল ইউনিয়ন বোর্ড প্রতিরোধ আন্দোলন । ভারতীয় কংগ্রেস এই আন্দোলনকে পুরোপুরি সমর্থন করেছিল । বীরেন্দ্রনাথ দেশবাসীর কাছে সেই সময় প্রতিজ্ঞা করে জানালেন, যতদিন পর্যন্ত না তিনি ইউনিয়ন বোর্ড গুলিকে তুলতে পারবেন, ততদিন পর্যন্ত তিনি খালি পায়ে থাকবেন জুতো পায়ে দেবেন না খালি পায়ে ঘুরে বেড়াবেন ।
জমিদার বাড়ির ছেলে, বিলেত ফেরত প্রতিষ্ঠিত ব্যারিস্টার খালি পায়ে জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরে ঘুরে দেশবাসীকে বুঝিয়েছিলেন, ইউনিয়ন বোর্ড গঠনের ক্ষতিকর বা খারাপ দিকগুলি । তিনি সাধারণ মানুষকে বোঝান ইংরেজ সরকারকে যেভাবে হোক ট্যাক্স দেওয়া বন্ধ করতে হবে তাই তিনি দেশবাসীকে ট্যাক্স দেওয়া বন্ধ করবার পরামর্শ দিলেন । ট্যাক্স বন্ধ হওয়ায়, সরকারের নির্দেশে পুলিশ একের পর এক ঘর বাড়ি লুটপাট থেকে শুরুকরে সমস্ত জিনিসপত্র ক্রোক করে থানায় নিয়ে যাওয়া শুরু করল । অনেক মানুষকে বন্দি করা শুরু করল । ক্রোক করা মাল গুলিকে নিলামের ব্যবস্থা করল ইংরেজ পুলিশ । ৫০০ টাকার মাল ৫ টাকা তেও কেউ কিনতে চাইলো না । বহু মানুষকে ইংরেজরা গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়ে দিল জেলে বন্দির সংখ্যা আর থানা এবং সরকারি দপ্তরগুলি ক্রোক করা জিনিসপত্র গুলিতে ভর্তি হতে লাগলো । শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে ব্রিটিশ সরকার ইউনিয়ন বোর্ড গুলি তুলে নেয় এবং সমস্ত বন্দী মানুষগুলিকে বিনা বিচারে ছেড়ে দিল । এরপর, কাঁথির ময়দানে বহু মানুষ সমবেত হয়ে বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের পায়ে জুতো পরিয়ে দেন ।
বীরেন্দ্র শাসমল’কে কংগ্রেস দল তাদের বঙ্গীয় সম্পাদক নিযুক্ত করেন। সম্পাদকরা ওই সময় প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে দল থেকে বৃত্তি পেত । বীরেন্দ্রনাথ শাসমল কোনদিনই ওই বৃত্তি’র টাকা নেননি । তিনি ছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের খুবই অনুগত ।
১৯২১ সালে ইংল্যান্ডের যুবরাজ ভারত ভ্রমণে এলে কংগ্রেস দেশব্যাপী হরতালের ডাক দেয় । কংগ্রেসের বঙ্গীয় সম্পাদক হিসেবে কলকাতায় হরতাল সংগটিত করেন বীরেন্দ্রনাথ শাসমল । চিত্তরঞ্জন দাশ, সুভাষচন্দ্র বসু ও বীরেন্দ্রনাথ শাসমল কে গ্রেপ্তার করা হয় । বিচারে ছ'মাস কারাভোগ করেন বীরেন্দ্রনাথ শাসমল । জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ফিরে আসেন মেদিনীপুরে । মেদিনীপুরের মানুষজন তাদের প্রিয় নেতা’কে সেদিন ‘দেশপ্রাণ’ উপাধিতে ভূষিত করে সম্মান জানান । দেশের রাজনীতিতে অবদান ও সংস্কারমূলক কাজের জন্যে তাকে ‘দেশপ্রান ’ উপাধি দ্বারা সম্মানিত করা হয় । ‘দেশপ্রাণ’ বীরেন্দ্র নাথ শাসমলের জনপ্রিয়তা এবং তাঁর তেজস্বীতা’কে কখনো সহ্য করতে পারত না ইংরেজরা । তাঁর তেজস্বিতাকে সহ্য করতে না পেরে ইংরেজ সরকার বীরেন্দ্রনাথকে ব্ল্যাক বুল (Black Bull) বলত ।
১৯২৩ সালে জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বীরেন্দ্রনাথ শাসমল । ইংরেজরা প্রতি পদে পদে তাঁর কাজে বাধা দিত কিন্তু তিনি সমস্ত বাধা উপেক্ষা করে বেশ কয়েকটি প্রাথমিক স্কুল স্থাপন করেছিলেন, পুকুর খনন থেকে শুরু করে নলকূপ তৈরি এবং রাস্তাঘাট নির্মাণ সহ এলাকার প্রভুত উন্নয়ন করতে থাকেন । জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান হয়ে প্রতিটি পদক্ষেপেই তিনি ইংরেজ সরকারকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি দেশবাসীর সেবায় নিয়োজিত এক নিবেদিত প্রাণ । জেলা বোর্ড যে একটি জনসাধারণের উন্নতির কর্মক্ষেত্র তা দেশপ্রাণ বীরেন্দ্র শাসমলের চেয়ারম্যান হওয়ার আগে মানুষ বুঝতেই পারেননি । দেশপ্রাণ এর আগে সাধারণত বোর্ডের চেয়ারম্যান হতেন ইংরেজদের মনোনীত যে কোনো এক ব্যক্তি । যিনি জেলাশাসকের নির্দেশ অনুযায়ী চলতেন । তাঁর চেয়ারম্যান থাকাকালীন দুটি ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল ছিলেন মেদিনীপুরের ‘সিংহশিশু’ বিদ্যাসাগরের যোগ্য উত্তরসূরী ।
প্রথম ঘটনাটি হলো – বাংলার ছোটলাট লিটন সাহেব মেদিনীপুর সফরে আসবেন । ছোট লাটের সম্বর্ধনা যাতে মেদিনীপুরে যথোপযুক্ত ভাবে হয়, সেই কারণে তৎকালীন জেলা শাসক মিস্টার গ্রাহাম তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য চিঠি লিখে ডেকে পাঠালেন , জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান বীরেন্দ্রনাথ শাসমল’কে । জেলাশাসকের চিঠির উত্তরে দেশপ্রাণ জানিয়ে দিলেন, তিনি ছোটলাটের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন না, কারণ ইংরেজ সরকার তাঁকে বিনা দোষে এবং বিনা প্রমাণে জেলে পাঠিয়েছিল । অতএব এ ব্যাপারে কোনরকম আলোচনারও অবকাশ নেই ।
দ্বিতীয় ঘটনা– এর কিছুদিন পরে জেলাশাসক দেশপ্রাণ’কে কোন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য তাঁর বাংলোতে ডেকে পাঠান । দেশপ্রাণ চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিলেন, জেলাশাসক প্রয়োজন মনে করলে তাঁর জেলা বোর্ডের দপ্তরে এসে দেখা করতে পারেন, তিনি জেলাশাসকের বাংলোতে যাবেন না । কতখানি মানসিক জোর এবং দেশাত্মবোধ থাকলে পরাধীন ভারতের একজন মানুষ, ব্রিটিশ জেলাশাসক কে এই ভাবে উপেক্ষা করতে পারেন, তা ‘দেশপ্রাণ’ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল দেখিয়ে গেছেন ।
‘দেশপ্রাণ’ বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের কর্মকাণ্ডের কথা মহাত্মা গান্ধী বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পেরেছিলেন এবং মাঝে মাঝে খোঁজ নিতেন বীরেন্দ্রনাথের । যেকোন মানুষ তাঁর দুঃখ কষ্ট নিয়ে দেশপ্রাণের কাছে সাহায্য চাইলে, সেই মানুষটি কোনদিনই শূন্য হাতে ফিরে যেতেন না, ঠিক যেমনটা আমরা দেখেছিলাম, ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের চরিত্রে ।
১৯৩০ সালে মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু হয় । বীরেন্দ্রনাথ ১৯৩০ সালে লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনেও প্রচুর অনুগামী নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন । নরঘাট ও পিছাবনী এলাকায় শান্তিপূর্ন পথে লবন আইন অমান্যে নিয়ে বিরাট জনসমাগম হয় ও প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে উঠে ।
মেদিনীপুরের কাঁথির বর্তমান পিছাবনীতে আর বর্তমান নন্দকুমারের নারঘাটে । এই আন্দোলনের আহবানে যুক্ত হতে মেদিনীপুরের মানুষেরাও ‘দেশপ্রাণ’ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল কে নিয়ে পিছাবনী ব্রিজের দিকে এগিয়ে যান । পিছাবনী দীঘা-কাঁথি রাস্তায় একটি পুরাতন গঞ্জ - লবন আইন সত্যাগ্রহের অন্যতম ধাত্রীভূমি । এটির পূর্বের নাম ছিল চন্দনপুর - লবন সত্যাগ্রহে পুলিশের গুলির সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলনকারীরা ঠিক করেন তাঁরা লড়াইএর ময়দান ছেড়ে পিছিয়ে যাবেন না - খালি হাতে দাঁড়িয়ে আইন অমান্য করবেন । ঔপনিবেশিক পুলিশের দমন পীড়নের সামনে দাঁড়িয়ে তাঁরা না পিছিয়ে আইন অমান্য করেন পিছাবিনী খালের মাটিতে লবন তৈরি করে । সে লড়াইএর স্মরণে স্থানটির নাম মুখের কথায় পিছাবনি হয়ে যায় - শুধু আন্দোলনের তীব্রতায় একটা স্থানের নাম পরিবর্তিত হয়ে যায় - এই আমাদের দেশ এই হলো মেদিনীপুর ।
দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন মামলায় বিপ্লবীদের জন্য বিনা পারিশ্রমিকে সওয়াল করেছিলেন হাইকোর্টে । মেদিনীপুরের জেলাশাসক ডগলাস হত্যা মামলায় তিনি আসামী পক্ষের হয়ে লড়াই করেছিলেন মেদিনীপুর আদালতে ।
১৯৩৩ সালে কলকাতা কর্পোরেশনের নির্বাচন হয়, ওই নির্বাচনে জয়ী হন ‘দেশবন্ধু ’ চিত্তরঞ্জন দাশ, দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু । ‘দেশবন্ধু ’ চিত্তরঞ্জন দাশ কলকাতা কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন । প্রধান অফিসার হিসাবে নিযুক্ত হওয়ার কথা ছিল দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের, কিন্তু সেদিন ওই পদে বসানো হয়েছিল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু’কে । মেদিনীপুরের মুকুটহীন সম্রাটের প্রতি সেদিন অবিচার করা হয়েছিল । এর পরের বছর দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল কেন্দ্রীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন । এর আগে, আইন সভার নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করাকে কেন্দ্র করে চিত্তরঞ্জন দাস, মতিলাল নেহেরু, সত্য মূর্তি, হাকিম আফজাল খা, পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য , বীরেন্দ্রনাথ শাসমল সহ অনেকে কংগ্রেস ছেড়ে “স্বরাজ্য পার্টি”গঠন করেন । দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ওই দলের সভাপতি নির্বাচিত হন । পরে অবশ্য এই দল কংগ্রেসের সঙ্গে মিশে যায় । কঠোর পরিশ্রমের কারণে দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল একসময় খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েন । ২৪ শে নভেম্বর ১৯৩৪ সালে মাত্র ৫৩ বছরে বছর বয়সে তাঁর জীবন দীপ নিভে যায় ।
সম্রাট পঞ্চম জর্জের ভারত আগমনের বিরুদ্ধে ধর্মঘটে যোগ দিয়ে গিয়ে কারাবাস গ্রহন করেছিলেন তিনি । কারাগারে থাকাকালীন তিনি তাঁর আত্মজীবনীমূলক একটি পুস্তক লিখেছিলেন , যার নাম দেন “ স্রোতের তৃণ ”। বাংলা তথা ভারত মায়ের এই বীর সন্তান বলেছিলেন, “তিনি কখনও কারো কাছে মাথা নত করেননি । তাই তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর মাথা যেন অবনত না করা হয় । ” তাঁর ইচ্ছানুযায়ী তার মরদেহ দণ্ডায়মান অবস্থায় কলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশান ঘাটে দাহ করা হয় ।
বর্তমানে দক্ষিণ কলকাতার একটি রাস্তার নাম, কাঁসাই নদীর ওপর মেদিনীপুর-খড়গপুর সংযোগকারী সেতুটি’র নাম এবং কাঁথি মহাকুমার দুটি বিদ্যালয় তাঁর নামে নামকরণ, কাঁথির রেল স্টেশন তাঁর নামে নামকরন সহ কাঁথির একটি ব্লকের নামকরণ করা ছাড়া এই মানুষটিকে আমরা যথেষ্ট সম্মান প্রদান করতে পারিনি । এই মানুষটির প্রকৃত মূল্যায়ন এখনো বাংলা শুধু নয় দেশও যথাযথ ভাবে করে উঠতে পারেনি ।

ব্যবত্তারহাট, নন্দকুমার,পূর্ব মেদিনীপুর
🙏 যদি আপনি আপনার গ্রাম বা শহরকে ভালোবেসে থাকেন, তাহলে আপনিও পাঠাতে পারেন আপনার এলাকার তথ্য আমাদের কাছে।
নীচের লিংকে ক্লিক করে যোগ দেন আমাদের সাথে, তথ্য পাঠান হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের এডমিন দের কাছে, আপনার তথ্যটি বিবেচনা করে সর্বসমক্ষে প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পেজ ও গ্রুপে।💐
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সংযুক্ত হতে চাইলে এই লেখার উপর ক্লিক করুন 👈⬇️🔽⬇️🔽⬇️🔽⬇️🔽⬇️
আমাদের 👨💻 ওয়েবসাইটের ঠিকানা 👇
https://www.MEDINIKOTHA.in
আমাদের 🎦 ইউটিউবের ঠিকানা 👇
https://www.youtube.com/c/MEDINIKOTHA
আমাদের 🖼️ ইনস্টাগ্রামের ঠিকানা 👇
https://www.instagram.com/medinikotha
আমাদের 🤳 ফেসবুক গ্রুপের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/groups/medinikotha
আমাদের 🚻 ফেসবুক গ্রুপ কাঁথি মহকুমা ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/groups/contaigroup
আমাদের 🚀 টেলিগ্রাম গ্রুপের ঠিকানা 👇
http://t.me/medinikotha
আমাদের ✈️ টেলিগ্রাম চ্যানেলের ঠিকানা 👇
https://t.me/medinikatha
আমাদের 📧 ই-মেইল ঠিকানা 👇
medinikotha.contai@gmail.com
আমাদের 🗃️ কাঁথি পেজের ঠিকানা 👇 https://www.facebook.com/ContaiSubdivision
আমাদের 📖 দীঘা পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/DighaOldNew
আমাদের 📝 এগরা পেজের ঠিকানা👇
https://www.facebook.com/Egra2
আমাদের 📒 রামনগর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Ramnagar4
আমাদের 📔 হেঁড়িয়া পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Henria
আমাদের 📕 খেজুরী পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Khejuree
আমাদের 📙 নাচিন্দা পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/NachindaMa
আমাদের 📙 তাজপুর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Tajpoor
আমাদের 📓 শংকরপুর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Sankarpoor
আমাদের 📃 সাতমাইল পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Satmile
আমাদের 📄 পেটুয়াঘাট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Petuaghat
আমাদের 🗒️ দেউলীহাট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Medinikotha6
আমাদের 📘 জুনপুট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Junput2
আমাদের 📗 বাঁকিপুট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Bakiput
আমাদের 📚 মান্দারমনি পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Mandarmanee
আমাদের 🛰️ ওয়েবসাইট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/medinikotha.in

1 thought on “মেদিনীকথার উৎসর্গ দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল।”
Khub sundar upsthapona