মেদিনীকথার উৎসর্গ কবির কলমে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

ফাইল চিত্র,

✍️ শীর্ষেন্দু দাস
( প্রাক্তন শিক্ষক )

কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

জন্ম - 15.09.1876 মৃত্যু - 16.01.1938)
পিতা-মতিলাল চট্টোপাধ্যায়   
মাতা-ভুবনমোহিনী দেবী

'সংসারে দিলে যারা পেলে না কিছুই
নালিশ তাদের হ'য়ে আসি জানাতেই।
মানুষের মরণেতে তত ব‍্যথা নাই
মনুষ‍্যত্বের মৃত্যু হ'লে যত খানি পাই।
বিশ্বাস হারানো পাপ মানুষের প্রতি'
এমন ঘোষণা কার, কোন মহামতি?

মতিলাল পিতা, মাতা ভুবনমোহিনী
শরৎচন্দ্র তাঁদের পুত্র এ হেন মরমী।
দেবানন্দপুর গ্রাম হুগলী তাঁর জেলা
যেখানে মরমিয়ার শুরু পথ চলা।
সংসার চালাতে পিতার না ছিল সংগতি
বহুকষ্টে এফ্.এ.তেই পড়া তাই ইতি।

ভবঘুরে বীজ ছিল পিতা ধমনীতে
পুত্র শরৎও কোথা বেশী পারেনি টিকিতে।
কভুবা সাধুর চেলা, বাউল গায়ক
কুলী,ব‍্যবসায়ী কভু লেখক, নায়ক,
'দেবানন্দ' নামে কভু মিশন সন্ন্যাসী,
কেবল দেশবন্ধু যবে হলেন প্রত‍্যাশী
হুগলী জেলার হলেন কংগ্রেস সম্পাদক‌।
একমাত্র ওই পদে ষোল সন তক।

কবি শিল্পী চিত্রকার ও ঔপন্যাসিক
শেষ পরিচয়ে দেশে খ‍্যাত সমধিক।
বহু উপন‍্যাস আছে- কালজয়ী লেখা
'চরিত্রহীন' 'পল্লীসমাজ' 'গৃহদাহ' তথা
'শেষপ্রশ্ন' 'শ্রীকান্ত' ও 'পণ্ডিতমশাই'
'পথের দাবী' শ্রেষ্ঠ বলে, বলে অনেকেই।
রোমা রোঁলা 'শ্রীকান্ত'র অনুবাদ পড়ে
বিশ্বেশ্রেষ্ঠ এক উপন্যাস গিয়েছেন বলে।
'শেষ প্রশ্ন' অনুদিত যদি হোত, হায়!
 মানবেন্দ্রের মতে নোবেল আসতো বাংলায়।

ছোট গল্প 'মন্দির'টি ছদ্মনামে লেখা
প্রিয় দিদি অনিলার নাম আছে আঁকা।
'কুন্তলীন' পুরস্কার ওই নামে জেতা
আবির্ভাবে কথাশিল্পী মনের বিজেতা।
'রবীন্দ্র' 'জগত্তারিণী' আছে 'ডি লিট' মান
'রেঙ্গুন রত্ন'ও আছে, গান গেয়ে পান।
'দাদাঠাকুর' 'বাবাঠাকুর' বুঝি সেরা সম্মান
মিস্ত্রিপাড়ার কুলী-মজুর-মিস্ত্রিদের দান।

মানুষের মন নিয়ে এমন চিত্রন
সাবলীল ছন্দ-গদ‍্যে আসেনি কখন।
মেজদা, লালু,গফুর,অন্নদা, ইন্দ্রনাথ
কার হৃদয়ে নাই বা করবে রেখাপাত?
নিকষিত হেম দেখে ঋষি অরবিন্দ
হৃদয়ের রাজা কন কবীন্দ্র রবীন্দ্র‌।
বর্ণনার গুণ হেন শরৎ এলে হাতে
বেলা যেন কেটে যায় এক লহমাতে।
লেখাতে কি যে যাদু! মন করে বশ
মথিত হৃদয় হয় মুহূর্তেই বশ।
বারে বারে মন বলে আমি, আমি নই
আসলে চরিত্র এক ,তাঁরই চিত্রেই।

জীবনে কলমপাতে কত চোখে জল
কথাশিল্পী আপনাকে কি করেনি বিকল?
নিষ্ঠুর মাতাল বৃদ্ধ থেকে পরিত্রাণ
আঁখি জলে 'শান্তি' তাঁরে পতি রূপে চান।
শান্তিনীড় ছিন্ন হল প্লেগ আক্রমণে
মাতা শান্তি পুত্র সহ নিথর শয়ানে।
বহু পরে বাল‍্যবিধবা মোক্ষদা দেবীকে
'হিরণ্ময়ী' নাম দিয়ে নিলেন বরিয়ে।
অক্ষম যদি বা দুষে টেনে দু'আঁচড়
কালের তরঙ্গ পাতে ঘুচেছে সকল।

হৃদয়ের এত কথা কোথা তুমি পাও!
মনের গভীরে প্রিয় কতদূর ধাও?

তোমারে যে বীর বলি সে তো এই নয়
রণক্ষেত্রে অসি নিয়ে কাঁপিয়ে বেড়াও।
বীর বলি এ কারণে কত বীর জন
প্রাণদানে তুমি হলে প্রেরণা কারণ।
প্রণমি তোমারে প্রিয় প্রণমি প্রণমি
হৃদয়ের মাঝে তুমি যেন অন্তর্যামী।

আপনিও পাঠাতে পারেন আপনার এলাকার তথ্য, আপনার লেখা ছড়া, কবিতা, ছোটগল্প বা আপনার আঁকা ছবি।
আমরা বিচার বিশ্লেষণ করে শর্তসাপেক্ষে তা সর্বসমক্ষে প্রকাশ করব, আপনাদের প্রিয় এই ওয়েবসাইটে
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সংযুক্ত হতে চাইলে এই লেখার উপর ক্লিক করুন 👈

Social Share

অনুসন্ধান !!

এখনকার খবর !!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *