মেদিনীকথার উৎসর্গ স্বর্ণকুমারী দেবী।

ফাইল চিত্র,

স্বর্ণকুমারী দেবী

রবীন্দ্রনাথের জ্যেষ্ঠা ভগিনী স্বর্ণকুমারী দেবী বাংলা সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব । নানা ধরনের সাহিত্যসৃষ্টির ক্ষমতা তার ছিল । উপন্যাস থেকে শুরুকরে  গল্প , নাটক এবং কবিতা রচনায় তিনি যথেষ্ট পারদর্শিতা দেখিয়েছিলেন । তিনি সাময়িক পত্র সম্পাদনাতেও বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন । তাঁর সম্পাদিত " ভারতী "পত্রিকা সমকালে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিল । আসলে ইংরেজি সভ্যতা ও সাহিত্যের সহিত সংযােগের পর বাংলাদেশের সাহিত্যে যে নবজাগরণ হয় , স্বর্ণকুমারী দেবীর কণ্ঠেই দেশের নারী সমাজের পক্ষে তাহার প্রথম কলগীতি ধ্বনিত হয়ে উঠে ।স্বর্ণকুমারী দেবী একজন বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতকার ও সমাজ সংস্কারক। তিনিই ছিলেন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম উল্লেখযোগ্য মহিলা সাহিত্যিক।


জন্ম:
২৮ শে অগস্ট, ১৮৫৫ সাল, কলকাতা ।

প্রয়াণ :
৩ রা জুলাই, ১৯৩২ সাল, কলকাতা ।

স্বর্ণকুমারী দেবী ছিলেন দ্বারকানাথ ঠাকুরের পৌত্রী এবং দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের চতুর্থ কন্যা। অপর তিন দিদির নাম ছিল সৌদামিনী, সুকুমারী ও শরৎকুমারী। তার ছোটোবোনের নাম ছিল বর্ণকুমারী। সৌদামিনী ছিলেন বেথুন স্কুলের প্রথম যুগের ছাত্রী। ঠাকুর পরিবারের অন্যান্য মহিলা সদস্যেরা তাকে অনুসরণ করলেও, স্বর্ণকুমারী দেবী মূলত বাড়িতেই লেখাপড়া শিখেছিলেন। তিনি  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চেয়ে পাঁচ বছরের বড়ো ছিলেন ।

জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে নজরকাড়া শিক্ষার পরিবেশ ছিলো । দেবেন্দ্রনাথের তৃতীয় পুত্র হেমেন্দ্রনাথ শিক্ষার প্রসারের বিষয়ে বিশেষ উৎসাহী ছিলেন।
রবীন্দ্রনাথ তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন -
" বিদ্যালয়ের তুলনায় বাড়িতেই তারা অধিক শিক্ষালাভ করেছিলেন "।
স্বর্ণকুমারী দেবীর স্মৃতিকথা থেকে জানা যায়, তাদের শিক্ষয়িত্রী শ্লেটে কিছু লিখে দিতেন, সেই লেখাটিই তারা টুকে লিখতেন। দেবেন্দ্রনাথ এ কথা জানতে পেরেই এই যান্ত্রিক শিক্ষাদান পদ্ধতিটি তুলে দেন। পরিবর্তে তিনি অযোধ্যানাথ পাকড়াশি নামে এক দক্ষ শিক্ষককে নিয়োগ করে মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর জন্যে ।

১৮৬৮ সালে জানকীনাথ ঘোষালের সঙ্গে স্বর্ণকুমারী দেবীর বিবাহ হয়। জানকীনাথ ছিলেন নদিয়া জেলার এক জমিদার পরিবারের শিক্ষিত সন্তান। ঠাকুর পরিবার ছিল পিরালী থাকভুক্ত ব্রাহ্মণ। পিরালী ব্রাহ্মণ বংশের কন্যাকে বিবাহ করার জন্য জানকীনাথ পরিবারচ্যূত হয়েছিলেন। কিন্তু দৃঢ়চেতা জানকীনাথ ব্যবসা করে সাফল্য অর্জন করেন এবং নিজস্ব এক জমিদারি গড়ে তুলে "রাজা" উপাধি অর্জন করেন। তিনি ছিলেন একজন দিব্যজ্ঞানবাদী (থিওজফিস্ট)। জানাকিনাথ  ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা  সদস্য ছিলেন ।

স্বর্ণকুমারী দেবীর স্বামী ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সেক্রেটারি ছিলেন। তিনি নিজেও সামাজিক সংস্কার ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৮৮৯ ও ১৮৯০ সালে পণ্ডিতা রামাবাই, রামাবাই রানাড ও কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনিও জাতীয় কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশনে অংশ নেন। তিনিই ছিলেন প্রথম মহিলা যিনি জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে প্রকাশ্যে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

সংগীত, নাটক ও সাহিত্যে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির পুরুষ সদস্যদের সৃষ্টিশীলতা স্বর্ণকুমারী দেবীকেও স্পর্শ করেছিল। এই সময় জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর এই তিন ক্ষেত্রে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা চালাচ্ছিলেন। তাকে সাহায্য করছিলেন অক্ষয়চন্দ্র চৌধুরী ও রবীন্দ্রনাথ। জ্যোতিরিন্দ্রনাথের জীবন-স্মৃতি থেকে জানা যায়, জানকীনাথ ইংল্যান্ডে গেলে স্বর্ণকুমারী দেবী জোড়াসাঁকোয় এসে থাকতে শুরু করেছিলেন। এই সময় তিনিও তাদের সঙ্গে নতুন পরীক্ষানিরীক্ষায় মেতে ওঠেন। জ্ঞানদানন্দিনী দেবী যখন পরিবারের প্রাচীন প্রথাগুলিকে ভেঙ্গে নারী স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত করছিলেন, ঠিক সেই সময় স্বর্ণকুমারী দেবী সাহিত্য সাধনায় মগ্ন হয়ে উঠেছিলেন ।

১৮৭৬ সালে স্বর্ণকুমারী দেবীর প্রথম উপন্যাস দীপনির্বাণ প্রকাশিত হয়। ইতিপূর্বে ১৮৫২ সালে হানা ক্যাথরিন মুলেনস তার ফুলমণি ও করুণার বৃত্তান্ত প্রকাশ করে বাংলা ভাষার প্রথম ঔপন্যাসিকের মর্যাদা লাভ করেছিলেন। কিন্তু স্বর্ণকুমারী দেবীই ছিলেন প্রথম বাঙালি মহিলা ঔপন্যাসিক।

দীপনির্বাণ ছিল জাতীয়তাবাদী ভাবে অনুপ্রাণিত এক উপন্যাস। এরপর স্বর্ণকুমারী দেবী একাধিক উপন্যাস, নাটক, কবিতা ও বিজ্ঞান-বিষয়ক প্রবন্ধ রচনা করেন। বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান-পরিভাষা রচনার বিষয়ে তার বিশেষ আগ্রহ ছিল। তিনি অসংখ্য গানও রচনা করেছিলেন। সেই যুগের পরিপ্রেক্ষিতে স্বর্ণকুমারী দেবী বা কামিনী রায়ের মতো মহিলা সাহিত্যিকদের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। তারা ছিলেন শিক্ষিত বাঙালি নারীসমাজের প্রথম যুগের প্রতিনিধি। সেই হিসাবে তাদের দায়িত্বগুলি সাহিত্যরচনার মাধ্যমে পালন করে গিয়েছিলেন তারা।

১৮৭৯ সালে স্বর্ণকুমারী দেবী প্রথম বাংলা গীতিনাট্য (অপেরা) বসন্ত উৎসব রচনা করেন। পরবর্তীকালে তার অনুজ রবীন্দ্রনাথ এই ধারাটিকে গ্রহণ করে সার্থকতর গীতিনাট্য রচনায় সফল হয়েছিলেন।

১৮৭৭ সালে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ পারিবারিক পত্রিকা
 " ভারতী "  চালু করেন। এই পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর। দ্বিজেন্দ্রনাথ সাত বছর এই পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন। এরপর এগারো বছর এই পত্রিকা সম্পাদনা করেন স্বর্ণকুমারী দেবী। তিনি এই পত্রিকার স্বাতন্ত্র্য সৃষ্টি করতে কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। এই পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হত । এর ভাষাও ছিল সহজ সরল। সমালোচকেরা এই পত্রিকার উচ্চ প্রশংসা করতেন। স্বর্ণকুমারী দেবীর কন্যারা বারো বছর ও রবীন্দ্রনাথ এক বছর এই পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন। এরপর আট বছর স্বর্ণকুমারী দেবী আবার এই পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তারপর নয় বছরের ব্যবধানে আবার স্বর্ণকুমারী দেবী এই পত্রিকার সম্পাদনার ভার গ্রহণ করেন। এরপর দুই বছর সম্পাদনার পর তিনি পত্রিকাটি বন্ধ করে দেন। এই ভাবে ভারতী পত্রিকা প্রায় অর্ধশতাব্দীকালব্যাপী প্রকাশিত হয়।
ভারতী যখন প্রথম প্রকাশিত হয় তখন রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল মাত্র ষোলো। প্রথম সংখ্যা থেকেই এই পত্রিকায় তার লেখা প্রকাশিত হতে থাকে। আসলে এই পত্রিকার চাহিদাই রবীন্দ্রনাথকে নিয়মিত লিখতে বাধ্য করত এবং বহু বছর তিনি এক নাগাড়ে এই পত্রিকায় নিজের লেখা পাঠিয়ে এসেছিলন ।

অনাথ ও বিধবাদের সাহায্যার্থে ১৮৯৬ সালে ঠাকুরবাড়ির অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে স্বর্ণকুমারী দেবী "সখীসমিতি" স্থাপন করেন।
"সখীসমিতি" নামটি রবীন্দ্রনাথের দেওয়া। সরলা রায়ের অনুরোধে সখীসমিতির অর্থসংগ্রহের উদ্দেশ্যে রবীন্দ্রনাথ "মায়ার খেলা" নৃত্যনাট্যটি লিখে মঞ্চস্থ করেছিলেন।

১৮৯৮ সালে ভারতী ও বালক পত্রিকায় নিম্নলিখিত প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।

"সখীসমিতির প্রধান উদ্দেশ্য হল অসহায় অনাথ ও বিধবাদের সহায়তা করা। এই কাজ দু'ভাবে করা হবে। যেক্ষেত্রে এই সব বিধবা ও অনাথদের কোনো নিকটাত্মীয় নেই বা থাকলেও তাঁদের ভরণপোষণের ক্ষমতা সেই আত্মীয়দের নেই, তাঁদের ভরণপোষণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব সখীসমিতি নেবে। অন্যান্য ক্ষেত্রে সখীসমিতি তাঁদের যথাসাধ্য সাহায্য করবে। সখীসমিতি যে সব মেয়েদের পূর্ণ দায়িত্ব নেবে, তাঁদের লেখাপড়া শিখিয়ে স্ত্রীশিক্ষার প্রসার ঘটাবে। তাঁরা শিক্ষা সম্পূর্ণ করে অন্যান্য মহিলাদের লেখাপড়া শেখাবেন। সমিতি এই জন্য তাঁদের পারিশ্রমিকও দেবে।"
এইভাবে দু'টি উদ্দেশ্য সাধিত হবে। হিন্দু বিধবারা হিন্দুধর্মের অনুমোদনক্রমেই শ্রমদানের মাধ্যমে উপার্জনক্ষম হয়ে উঠবেন। 
সংগঠন পরিচালনা কেবলমাত্র সদস্যদের চাঁদায় সম্ভব নয় অনুভব করে, স্বর্ণকুমারী দেবী বেথুন কলেজে একটি বার্ষিক মেলার আয়োজন করেন। এই মেলায় ঢাকা ও শান্তিপুরের শাড়ি, কৃষ্ণনগর ও বীরভূমের হস্তশিল্প এবং বহির্বঙ্গের কাশ্মীর, মোরাদাবাদ, বারাণসী, আগ্রা, জয়পুর ও বোম্বাইয়ের হস্তশিল্প প্রদর্শিত হয়।তার উদ্দেশ্য ছিল ভারতের দেশজ পণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা। সেই যুগে এই মেলা কলকাতার সমাজে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
১৯০৬ সাল পর্যন্ত সখীসমিতি সক্রিয় ছিল। তারপর হিরন্ময়ী বিধবা আশ্রয় এর দায়িত্বভার গ্রহণ করে। স্বর্ণকুমারী দেবীর কন্যা হিরন্ময়ী দেবীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শশিপদ বন্দ্যোপাধ্যায় বরানগরে একটি বিধবা আশ্রম চালু করেন। এই আশ্রমের নাম ছিল "মহিলা বিধবা আশ্রম"। হিরন্ময়ী দেবীর মৃত্যুর পর এই আশ্রমটিরই নতুন নামকরণ হয় "হিরন্ময়ী বিধবা আশ্রম"। মহিলা বিধবা আশ্রমের প্রতিষ্ঠাকালীন কার্যনির্বাহী সমিতিতে ছিলেন স্বর্ণকুমারী, ময়ূরভঞ্জের মহারানি সুচারু দেবী, কোচবিহারের মহারানি সুনীতি দেবী (উভয়েই ছিলেন কেশবচন্দ্র সেনের কন্যা), লেডি হ্যামিলটন, প্রিয়ংবদা দেবী, শ্রীমতী চ্যাপম্যান ও শ্রীমতী সিংহ। হিরন্ময়ী দেবী ছিলেন আশ্রমের সচিব। হিরন্ময়ী দেবীর কন্যা তথা আশ্রমের পরিচালিকা কল্যাণী মল্লিকের লেখা থেকে জানা যায়, ১৯৪৯ সালেও এই আশ্রম সফলভাবে চালু ছিল।

জানকীনাথ ও স্বর্ণকুমারী দেবীর তিন সন্তান ছিলেন। এঁরা হলেন হিরন্ময়ী দেবী (১৮৭০ – ১৯২৫), জ্যোৎস্নানাথ ঘোষাল (১৮৭১ – ১৯৬২) এবং  সরলা দেবী চৌধুরাণী (১৮৭২ – ১৯৪৫)।
জ্যোৎস্নানাথ ঘোষাল আইসিএস পরীক্ষায় পাশ করে পশ্চিম ভারতে কর্মজীবন শুরু করেন ।

উপন্যাস,কবিতা ও নাট্যরচনায়ও স্বর্ণকুমারী আগ্রহের পরিচয় দিয়েছেন । কিন্তু উপন্যাস রচনায়ই তিনি সর্বাধিক কৃতিত্ব দেখিয়েছেন ।
তাঁর উপন্যাসের মধ্যে -
" দীপ নির্বাণ "( ১৮৭৬ )," মিবার-রাজ" (১৮৭৭), "ছিন্নমুকুল "( ১৮৭৯ ) , "মালতী" ( ১৮৮০ ) ," মিবার রাজ " ( ১৮৮৭ ) , "হুগলীর ইমামবাড়া" ( ১৮৮৮ ) , "স্নেহলতা" ( ১৮৯০ , ১৮৯৩ ) , "বিদ্রোহ "( ১৮৯০ ) "ফুলের মালা" ( ১৮৯৫ ), "কাহাকে" (১৮৯৮), "বিচিত্রা " (১৯২০),"স্বপ্নবাণী " (১৯২১), "মিলন রাত্রি " (১৯২৫) প্রভৃতির নাম করা চলে ।
 "নবকাহিনী "( ১৮৯২ ) নামে গল্পের সঙ্কলনও তাঁর আছে । এগুলি ছােটগল্পের রূপসিদ্ধিতে না পৌছিলেও একেবারে মূল্যহীনও বলা যাবে না । সামাজিক ঐতিহাসিক দু ধরনের উপন্যাস রচনায়ই তিনি সমান উৎসাহ বােধ করেছেন । বঙ্কিমচন্দ্রের মত কল্পনার প্রসার এবং মানবজীবনের গভীরতম প্রদেশ মন্থন করবার দিকে তিনি যাননি , রমেশচন্দ্রের সহজ জীবনবােধ ও তথ্যনিষ্ঠার প্রতিই তিনি অধিক আকর্ষণ অনুভব করেছেন । তাঁর প্রথম উপন্যাস দীপ নির্বাণে ’ কাঁচা হাতের ছাপ স্পষ্ট । চিতাের রাজ পরিবারের কথা মহম্মদ ঘােরীর প্রসঙ্গ একে উপন্যাসের রঙ দিয়েছে , কিন্তু তা উপন্যাসটির বিবর্ণতা ঘােচাতে পারেনি । বাংলাদেশের পাঠান যুগের ইতিহাসকে কেন্দ্র করে লেখা ফুলের মালা ’ তুলনায় অনেক পাকা হাতের রচনা । কিন্তু রাজপুতানার ইতিহাসকে কেন্দ্র করে লেখা ‘ মিবার রাজ ’ ও ‘ বিদ্রোহ ’ তার ঐতিহাসিক উপন্যাসগুলির মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট । দ্বিতীয় উপন্যাসটি কিন্তু প্রথমটির তুলনায় অনেক পরিণত । তথ্য সন্নিবেশের ঘনত্ব , বিশ্লেষণের সূক্ষ্মতা , ট্র্যাজেডির দাবদাহ , প্রবৃত্তির সংঘাত এবং ভীলদের জীবনচর্চা বর্ণনায় ও ভাষার কবিত্বে উপন্যাসটি নানা দিক থেকেই উপভােগ্য হয়ে উঠেছে ।

সাবর্ণ সংঘাতের ছায়া স্বর্ণকমারীর সামাজিক উপন্যাসগুলির মধ্যে ফুটে উঠেছে ।
সমকালীন সমাজ - জীবনের আদর্শ - সংঘাতের ছায়া স্বর্ণকুমারীর সামাজিক উপন্যাসগুলির উপরে কিছু গভীরভাবে পড়েছে । ফলে এদের সহজ পারিবারিক আবেদন প্রায়ই তর্ককন্টকিত উচ্চকণ্ঠ বক্তৃতায় আচ্ছন্ন হয়েছে । স্নেহলতা ’ উপন্যাসের প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড প্রায় পৃথক রচনা । বিধবাবিবাহ এবং অন্যবিধ সামাজিক সংস্কার প্রচারই উপন্যাসের ধর্মকে অতিক্রম করে বড় হয়ে উঠেছে । ফলে চরিত্রগুলির ব্যক্তিত্ববিকাশ যেমন স্বাভাবিক হয়নি তেমনি মানবিক রসও বহুলাংশে ব্যাহত হয়েছে । এর মধ্যে কাহাকে ’ নামক ক্ষুদ্র উপন্যাসটি ব্যতিক্রমরূপে উপস্থিত । ইহার মধ্যে যথেষ্ট তর্ক - বিতর্ক আছে , যথেষ্ট পাণ্ডিত্যের আস্ফালন আছে , ইংরেজি সাহিত্য ও সমাজের তুলনামূলক সমালােচনা আছে , কিন্তু সকলের উপর দিয়া একটি স্ত্রী হস্তের লঘু কোমল স্পর্শ অনুভব করা যায় । একটি চমৎকার রােমান্টিক কমেডি হয়ে উঠেছে ।

নাটক	রাচিনতেও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন 
"বিবাহ-উৎসব "(১৮৯২),"বসন্ত-উৎসব" (১৮৭৯) "রাজকন্যা", "দিব্যকমল",  "দেবকৌতুক", "কনেবদল", "যুগান্ত", "নিবেদিতা" প্রভৃতি  ।

স্বর্ণকুমারী দেবী "গাথা", "গীতিগুচ্ছ" নামে কাব্যগ্রন্থও রচনা করেছেন  ।
তিনি "পৃথিবী " নামক একটি বিজ্ঞান-বিষয়ক 
প্রবন্ধ রচনা করেন ।

১৯২৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণকুমারী দেবীকে "জগত্তারিণী স্বর্ণপদক" দিয়ে সম্মানিত করে। ১৯২৯ সালে তিনি বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন।

১৯৩২ সালের ৩ রা জুলাই  কলকাতা ।স্বর্ণকুমারী দেবীর  প্রয়াণ ঘটে ।

✍️ সন্দীপ চক্রবর্ত্তী

(ব্যবত্তারহাট, নন্দকুমার, পূর্ব মেদিনীপুর )

🙏 যদি আপনি আপনার গ্রাম বা শহরকে ভালোবেসে থাকেন, তাহলে আপনিও পাঠাতে পারেন আপনার এলাকার তথ্য আমাদের কাছে।
নীচের লিংকে ক্লিক করে যোগ দেন আমাদের সাথে, তথ্য পাঠান হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের এডমিন দের কাছে, আপনার তথ্যটি বিবেচনা করে সর্বসমক্ষে প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পেজ ও গ্রুপে।💐

আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সংযুক্ত হতে চাইলে এই লেখার উপর ক্লিক করুন 👈⬇️🔽⬇️🔽⬇️🔽⬇️🔽⬇️
আমাদের 👨‍💻 ওয়েবসাইটের ঠিকানা 👇
https://www.MEDINIKOTHA.in
আমাদের 🎦 ইউটিউবের ঠিকানা 👇
https://www.youtube.com/c/MEDINIKOTHA
আমাদের 🖼️ ইনস্টাগ্রামের ঠিকানা 👇
https://www.instagram.com/medinikotha
আমাদের 🤳 ফেসবুক গ্রুপের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/groups/medinikotha
আমাদের 🚻 ফেসবুক গ্রুপ কাঁথি মহকুমা ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/groups/contaigroup
আমাদের 🚀 টেলিগ্রাম গ্রুপের ঠিকানা 👇
http://t.me/medinikotha
আমাদের ✈️ টেলিগ্রাম চ্যানেলের ঠিকানা 👇
https://t.me/medinikatha
আমাদের 📧 ই-মেইল ঠিকানা 👇
medinikotha.contai@gmail.com
আমাদের 🗃️ কাঁথি পেজের ঠিকানা 👇 https://www.facebook.com/ContaiSubdivision
আমাদের 📖 দীঘা পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/DighaOldNew
আমাদের 📝 এগরা পেজের ঠিকানা👇
https://www.facebook.com/Egra2
আমাদের 📒 রামনগর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Ramnagar4
আমাদের 📔 হেঁড়িয়া পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Henria
আমাদের 📕 খেজুরী পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Khejuree
আমাদের 📙 নাচিন্দা পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/NachindaMa
আমাদের 📙 তাজপুর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Tajpoor
আমাদের 📓 শংকরপুর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Sankarpoor
আমাদের 📃 সাতমাইল পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Satmile
আমাদের 📄 পেটুয়াঘাট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Petuaghat
আমাদের 🗒️ দেউলীহাট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Medinikotha6
আমাদের 📘 জুনপুট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Junput2
আমাদের 📗 বাঁকিপুট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Bakiput
আমাদের 📚 মান্দারমনি পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Mandarmanee
আমাদের 🛰️ ওয়েবসাইট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/medinikotha.in

Social Share

অনুসন্ধান !!

এখনকার খবর !!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *