মেদিনীকথার উৎসর্গ কবির কলমে যতীন্দ্রনাথ মুখ‍্যোপাধ‍্যায়

ফাইল চিত্র,

✍️ শীর্ষেন্দু দাস ( প্রাক্তন শিক্ষক )

বাঘা যতীন

জন্ম - 07.12.1879 মৃত্যু - 10.09.1915
পিতা- উমেশ মুখ‍্যোপাধ‍্যায়
মাতা - শরৎশশী দেবী
কুষ্টিয়ার কয়া গ্রাম অতিশয় শ্রেষ্ঠ যতীন্দ্র মুখার্জী যেথা হলেন ভূমিষ্ঠ। উমেশানী শরৎশশী প্রসবে আকর ঊনিশ'শ ঊনাশির সাত ডিসেম্বর। যে মায়ের প্রাণ নাহি কাঁপে ছুঁড়ে দিতে নদীতে সন্তানে নিজ সাঁতার শেখাতে, সে বাঘিনী মাতার পুত্র বাঘা যতীন নিজ হাতে বাঘ মেরে করেছে অধীন। বাল‍্যে পিতৃহীন যতি মাতুল ভবনে ধন‍্য সে কৃষ্ণনগরে পাঠের কারণে।
পড়া চেয়ে দেহ গড়া, দেহ চেয়ে মন পাগলা ঘোড়া কব্জা করা একাই এমন। সেন্ট্রাল কলেজ ছেড়ে স্টেনোগ্রাফি শিক্ষা রাজ কাজ পেতে যার আছিল অপেক্ষা। বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা শোনা বটে যায় হুইলারের স্টেনোগ্রাফার প্রত‍্যক্ষ করায়। ধরা প'ড়ে জেলে যবে বিপ্লবীর দল 'অনুশীলন' 'যুগান্তর' হ'তেছে বিকল, কে রাখিবে বিপ্লবের সুকঠিন রাশ? যতীন্দ্র পুরাতে নিল বিপ্লবের আশ।
'রডা'কোম্পানির গুলি বারুদ পিস্তল সরাতে যতির প্ল‍্যান হয়নি বিফল। কতভাগে ভাগ হ'ল লুণ্ঠনের মাল বিপ্লবীরা পেল যেন মধুর সকাল। রাজস্ব লুণ্ঠন এক অর্থের উপায় ললিত পড়িল ধরা লুণ্ঠনে নেত্রায়। আলিপুরে আশু খুন চারু বসু দ্বারা বীরেন্দ্র গুলিতে সামশুল খাঁচা ছাড়া। নানাভাবে যতীন্দ্রের নাম এল উঠে প্রমাণাভাবে বা ছাড় কিছু জেল খেটে।
রক্ষার কবচ ছিল সরকারী চাকুরী এখন সে কাজ আর পেলে নাকো ফিরি। অবনী মানব সহ রাসুর চেষ্টায় রসদ হলো বা কিছু পাওয়ার উপায়। কিন্তু হায়! 'ম‍্যারোভিক' অস্ত্রশস্ত্র ভরা আমেরিকায় বামাল প'ড়ে গেল ধরা। বিশ্বাসঘাতক কুমুদ শতক ঘৃণিত ইংরেজের কাছে প্ল‍্যান ফাঁস করে দিত। কে জানে কেমন লেখা হতো ইতিহাস কুখ‍্যাত কুমুদ যদি রাখিত বিশ্বাস!
যতীনের সন্ধানেতে পুলিশ হন‍্যে হয় গোপনে বিপ্লবী পঞ্চ উড়িষ্যায় রয়। সাইকেল দোকান এক গড়ে বালেশ্বরে বাঙ্গালীর আনাগোনা ইংরেজ নজরে। ছোট্ট বাহিনী নিয়ে টেগার্ট অগ্রসর বালেশ্বরে আকষ্মিক বাঁধিল সমর। মাটির গর্তকে ট্রেঞ্চ করিয়া তখন বিপ্লবীরা শুরু করে গোলা বরিষণ। টেগার্ট হটল পিছু, এরা পঞ্চজন সুযোগে 'বালাম' তীরে উপস্থিত হন।
ইংরেজ রটিল এবে বাঙ্গালী ডাকাত সমাচার দিলে পাবে ইনাম সাক্ষাৎ। পঞ্চ যুবা ডাকাত কি? বন পথে যায়। ইনামের লোভে মাঝি খবর পৌঁছায়। ক্ষুধা যুক্ত ক্লান্ত দেহ খাদ‍্য নেই কণা অচিরে গুলির শব্দ গেল কিন্তু শোনা। পজিশন নিতে হ'ল করিয়া সন্ধান মস্ত এক উইঢিপি অন্বেষণে পান। দক্ষ সেনাপতি সম রহে প্রতীক্ষায় কতক্ষণে প্রতিপক্ষ নাগালে পৌঁছায়।
চলিল অসম যুদ্ধ ঘোর রণাঙ্গন বিপক্ষে তিনশ সৈন‍্য এরা পঞ্চজন। মহামারে ছন্নছাড়া ইংরেজ যখন ফুরায়ে আসিল গোলা কপাল এমন। যদি পেত আরো গোলা প্রয়োজন মত ইংরেজ হটত ঠিক আগেকার মত। মস্তক ভেদিল গোলা চিত্তপ্রিয় হত আশ্রয় যতীন্দ্র কোলে শেষ বার মত। যতির হাতে পেটে, জ‍্যোতিষ আহত নীরেন ও মনোরঞ্জন নয়ত অক্ষত।
গোলা শেষ বোঝা গেল নীরব বিপক্ষ ক্রমেতে ঘিরিল এবে ইংরেজের পক্ষ। যত দায়ভার তার-যতীন্দ্র ঘোষিল পালন করেছে এরা আদেশ কেবল। ব্রিটিশ রাজ অবিচার নাহি যেন করে হয়ত বক্তব্য শেষ নথিভুক্তি তরে। কেমন বীর?শুনবে নাকি? শোনো টেগার্টের মুখে 'ভারতের বীরশ্রেষ্ঠ,গভীর শ্রদ্ধা তাঁকে'। মাতা বন্ধু ভ্রাতা ছিল তরুণী বনিতা দেশ লাগি দিতে প্রাণ না ছিল ভণিতা। বীর গাঁথা জান বীর, না রহিবে হীন বীরের সংস্পর্শে বীর শোধ মাতৃঋণ। কুজনেতে কিবা কাজ সুজন পাইলে সুজন স্বজন সুহৃৎ সম্বন্ধ সাধিলে।

আপনিও পাঠাতে পারেন আপনার এলাকার তথ্য, আপনার লেখা ছড়া, কবিতা, ছোটগল্প বা আপনার আঁকা ছবি।
আমরা বিচার বিশ্লেষণ করে শর্তসাপেক্ষে তা সর্বসমক্ষে প্রকাশ করব, আপনাদের প্রিয় এই ওয়েবসাইটে
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সংযুক্ত হতে চাইলে এই লেখার উপর ক্লিক করুন 👈

Social Share

অনুসন্ধান !!

এখনকার খবর !!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *