

আমরা নগররক্ষীরা
ঈপ্সিত পাওনা মিটিয়ে দিয়ে
জুয়া খেল-রাজপথে,ল্যাম্প পোষ্টের তলায়, অলিতে গলিতে, জঙ্গলে বাগানে, পোড়ো মন্দির বা মসজিদে
আমরা নগররক্ষীরা তোমাদের ধরব না।
খুন করে ঝুলিয়ে দাও গাছে বা পোষ্টে
ফেলে দাও খানাখন্দে বা গাঙ্গে
কেরোসিন বা পেট্রোল দিয়ে জ্বালিয়ে দাও
রেপ করে শেয়াল কুকুরের মুখে লাশ ফেলে দাও
আমরা নগররক্ষীরা তোমাদের ধরব না
তবে কিন্তু পাওনা মিটিয়ে।
বারুদের স্তুপ জমাও না
অস্ত্রের কারাখানা বসাও না
আগুন লেগে ছাদ উড়ে যাক্
কেঁপে যাক্ সামনের ঘরগুলো
হাঁ হোক্ দেওয়ালের ফাটল
কয়েক মাইল দূর থেকে
আলোর রোশনাই ও তুবড়ির প্রচণ্ড শব্দে কান ফাটুক-ফাঁক দিয়ে ঠিক বার করে আনব।
মাঝে মধ্যে টেবিলের তলায় যেমন লুকোই
তেমনি মাঝরাতে ঘরভেঙ্গে বার করে আনি তাদের
যারা এই মসৃণ পথের বাধা।
নগর রক্ষার ভার আমাদের উপর
নিজেকে রক্ষা না করে তো আর নগর রক্ষা হয় না।
আমরা, আমাদের তোমাদের সকলকে রক্ষা করব;
শুধু এই পারস্পারিক রক্ষার কাজে যারা বিঘ্ন ঘটাবে-
তাদের আমরা ছাড়ব না।
ঘর ভেঙ্গে কেশ দিয়ে জেলে ভরব।
সকাল বিকাল সন্ধে রাতে-যখন খুশী
চলছে না চলবে না করে সব অচল করে দাও
ভাঙ্গ, পোড়াও, তচনচ করে দাও-পাওনা মিটিয়ে;
আমরা নগররক্ষীরা তোমাদের ধরব না,
আইনের ফাঁক খুঁজে ফাঁকতালে বের করে আনব।
শুধু যারা সৎপথে থাকার নামে,
ঐতিহ্য সংস্কৃতি ইত্যাদি মুল্যবোধের ধুয়া তুলে
অর্থহীন হৃদয়বৃত্তির অত্যন্ত কুসংস্কার মায়ায়
আবেগজড়িত বাধা দেবে এই মসৃণ পথে
আমরা নগররক্ষীরা তাদের কিছুতেই ছাড়ব না।
পেঁচার মত রাত জাগি
রাতেই তো খেলে পাকা খেলোয়াড়
বাম ডানের বিচার করি না-
জীবন্ত সব্যসাচী কিনা-
তবে মুস্কিল হলো
দৈত্যের রাজপ্রাসাদেও প্রহ্লাদ জন্মায়,
বিকর্ণ প্রলাপ বকে।
তা জন্মাক, বকুক
ওরা আর কজন, কটাই বা দিন ওদের?
আমরা আছি চিরকাল।
সংস্কারের ভিত্তিহীনতায়, অর্জিত সংস্কার ছাড়া যায়?
পয়সা হওয়ায় ওড়ে-ধরতে জানতে হয়
মূল্যবোধের অপৌরুষেয় নীচতায়-
হাওয়াটাই চিনতে না পারলে
এ যুগে বৃথা কেন জন্মানো?
আসল কথা হোল অভিযোজন
অভিযোজন ছাড়া বাঁচতো নাকি মানুষ?
অভিযোজনে অক্ষমদের ধরি সক্ষম করতে।
জগতে কিছুই চিরকাল থাকে না।
ভাঙ্গে গড়ে।
সত্য-মিথ্যা,ভালো-মন্দ
স্থান বদল করে আসছে চিরকাল।
এ পথের পথিক হয়ে সহযাত্রীদের ধরি কি করে?
রাজা-বাদশা, পুরোহিত-জমিদার..
হালতক্ রাজনৈতিক নেতা
অষ্টতর শত নাম-রূপও ওই রকম
গিরগিটির মত শত শত রং বদল
অভিযোজন হলো স্বাভাবিক ধর্ম্ম।
তাই, আমরা ছিলাম-আছি-থাকব চিরকাল।
পরকাল? সে আবার কি?
দেহাত্মবোধী আমাদের সবটাই একাল-চিরকাল।
গর্তের অতলে তলিয়ে ছিলাম-আছি-থাকবো
অদেখা অশোনা অজানা
দীর্ঘশ্বাস, ঘৃণা, অভিশাপ মাথায় নিয়ে।
আপনিও পাঠাতে পারেন আপনার এলাকার তথ্য, আপনার লেখা ছড়া, কবিতা, ছোটগল্প বা আপনার আঁকা ছবি।
আমরা বিচার বিশ্লেষণ করে শর্তসাপেক্ষে তা সর্বসমক্ষে প্রকাশ করব, আপনাদের প্রিয় এই ওয়েবসাইটে।
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সংযুক্ত হতে চাইলে এই লেখার উপর ক্লিক করুন 👈
