মেদিনীকথার উৎসর্গ যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত।

ফাইল চিত্র,

যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত

যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত  একজন ভারতীয় বাংলা ভাষার কবি ও লেখক ছিলেন।  গদ্য ও পদ্য উভয় ক্ষেত্রের  রচনাতেই অগাধ "দক্ষতা ছিল। তার বিশিষ্ট কাব্যধারা বাংলা সাহিত্যে নিজস্ব স্থান করে নিয়েছিল। “কাব্যপরিমিতি”, “মরীচিকা', “মরুশিখা' প্রভৃতি রচনা বাংলা সাহিত্য ধরায় অনন্য হয়ে রয়েছে । শেষবয়সে “ম্যাকবেথ', হ্যামলেট”, “ওথেলো”, তে আত্মনিয়োগ করেছিলেন কবি ।

 জন্ম :
২৬ শে জুন, ১৮৮০ সাল, পাতিলপাড়া পূর্ব বর্ধমান

মৃত্যু :
১৭ ই  সেপ্টেম্বর, ১৯৫৪ সাল ।


যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের জন্ম ১৮৮০ সালের ২৬ শে জুন, পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার পাতিলপাড়ায় তাঁর মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।  তাঁর পৈতৃক গ্রাম হরিপুর, পশ্চিমবঙ্গ নদীয়া জেলার শান্তিপুরের নিকটে অবস্থিত এক গ্রামে ।


পিতা দ্বারকানাথ সেনগুপ্ত এবং মাতা মোহিতকুমারী দেবী। যতীন্দ্রনাথ তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা নদিয়া জেলার বৈষ্ণব সংস্কৃতির একটি আসন শান্তিপুর থেকে প্রায় তিন মাইল দূরে নিজ গ্রাম হরিপুরে করেছিলেন।  কলকাতায় এসে তিনি তাঁর কবিরাজ চাচার সাথে ছিলেন এবং ১৯০৩ সালে প্রবেশিকা পাস করেন, ১৯০৫ সালে প্রথম আর্টস পরীক্ষায় সাধারণ পরিষদের ইনস্টিটিউশন থেকে, বর্তমানে স্কটিশ চার্চ কলেজ । এবং পরে বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে স্নাতক হন  শিবপুরের কলেজ বর্তমানে IIEST, যা তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত ছিল।১৯০৮ সালে তিনি হাজারীবাগের ঝাড়খণ্ড রাজ্য  অনুশীলনকারী আইনজীবী চারুচন্দ্র গুপ্তের দ্বিতীয় কন্যা জ্যোতিরলতা দেবীর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এক দরিদ্র পরিবার ছিল যে কবি ছিলেন এবং তাঁর পিতা দ্বারকানাথ তাঁর সক্রিয় জীবনের বেশিরভাগ সময় পঠিশরের একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে বর্তমানে বাংলাদেশে ঠাকুর এস্টেটের মালিকানাধীনে কাটিয়েছেন। 

কয়েক বছর তিনি নদিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রকৌশলী বা প্রযুক্তিবিদ হিসাবে কাজ করেছিলেন। এরপরে তাঁর অসুস্থতার ঝাঁকুনির কারণে তিনি প্রায় তিন বছর বেকার হয়ে পড়েছিলেন। গান্ধীবাদে এক প্রখর বিশ্বাসী তিনি চরখায় সুতা কাটা এবং বেকার গ্রামের ছেলেদের সহায়তায় ঘরে তৈরি ম্যাচ বক্স তৈরি করে অভাব পূরণ করার চেষ্টা করেছিলেন।  । ১৯৩৩ সালে তিনি কসিমবাজার রাজ এস্টেটে ইঞ্জিনিয়ারের পদ গ্রহণ করেন। ১৯৫০ সালে অবসর অবধি তিনি একই পদে ছিলেন।

যতীন্দ্রনাথ বিশের দশকে বাংলা সাহিত্যের দৃশ্যে তাঁর নিজের একটি রচনা দিয়ে রাগান্বিত পুরুষতন্ত্রের কবি হয়েছিলেন।  তাঁর প্রথম তিনটি বই মেরিচিকা (মেরাজ), মারুশিখা (মরুভূমি শিখা) এবং মারুমায়া (মরুভূমি) একটি নতুন ধারার কবি হিসাবে তাঁর খ্যাতি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যিনি ইন্দ্রিয়ের উপলব্ধি ছাড়িয়ে রোমান্টিকতাবাদ এবং যে কোনও উৎকৃষ্ট  কল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।  তিনি বাংলা কবিতায় ঠাকুরের সমস্ত বিস্তৃত প্রভাব থেকে দূরে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।  তৎকালীন রোমান্টিক কবিদের প্রতি তাঁর তির্যক মন্তব্য এবং ঈশ্বর সম্পর্কে বিভিন্ন মন্তব্য , প্রায় সর্বদা ব্যঙ্গাত্মক এবং কখনও কখনও অযৌক্তিক মনে হয় অনেকের কাছে । তাকে নাস্তিক এবং হতাশবাদী হিসাবে চিহ্নিত করেছেন অনেকে । যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত, মোহিতলাল মজুমদার ও কাজী নজরুল ইসলামের ত্রয়ী বাংলা কবিতায় আধুনিকতাবাদের সূচনা করেছিলেন বলে বিদ্যানরা সাধারণত একমত হন। রূপ ও বিষয়বস্তু উভয়ই তাঁর প্রচলিত সংচিত শব্দ এবং মেট্রিকাল আকারে বা তাঁর অনুধাবিত নাস্তিকতার পাশাপাশি দেহাতিগত প্রকাশের নির্বিঘ্ন অনুভূতিতে, তিনি বিশিষ্ট আধুনিক কবিদের তাতক্ষনিক গোষ্ঠীর উপর দৃঢ় প্রভাব ফেলেছিলেন।  সায়ম  থেকে তার কবিতাগুলি তারুণ্যের জন্য সৌন্দর্য, ভালবাসা এবং প্রেমের  প্রতি অনুধাবনযোগ্য মোড় নিয়েছিল। তিনি আসলেই নাস্তিক নন তবে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে তাঁর একটি মানসিক মনোভাব, সম্ভবত এমন কোনও ব্যক্তিগত স্ব-ঈশ্বরের সাথে প্রেম-বিদ্বেষের সম্পর্ক প্রতিফলিত হয়েছিল যার সৌম্য মুখ তিনি দেখতে চেয়েছিলেন কিন্তু পারেননি। তিনি সমাজের দরিদ্র মানুষদের জীবন চিত্র ব্যাপকভাবে লেখেন। রূপকথার বিষয়বস্তু সত্ত্বেও এই কবিতাগুলি একটি বিস্তৃত মানবতাবাদের প্রতিনিধিত্ব করে যা অবাক হওয়ার সাথে সাথে নারীবাদের বীজও ছিল। 

 যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত মরীচিকা ' ( ১৯২৩ ) , ‘ মরুশিখা ( ১৯২৭ ) , মরুমায়া ’ ( ১৯৩০ ) , সায়ম ’ ( ১৯৪০ ) , “ ত্রিযামা ’ , ( ১৯৪৮ ) এবং “ নিশান্তিকা ' কাব্যে যতীন্দ্রনাথ আপন বিশিষ্ট মুদ্রিত করেছেন । যতীন্দ্রনাথের সর্ব - নশ্বরতার ধারণা এবং তার সঙ্গে সম্পৃক্ত জীবনতৃষ্ণা একান্তই প্রত্যক্ষ ও স্পষ্ট সত্য— জ্ঞানবুদ্ধির আয়ত্তগম্য বিষয় । এখান থেকেই জন্ম নিয়েছে তার দুঃখবাদ । তাঁর দুঃখবাদের মূলে কোনাে দুজ্ঞেয়তার চেতনা নেই । দুয়েতা , অসীমাভিমুখী রহস্যদ্যোতনা , ইন্দ্রিয়াতীত সূক্ষ্মতা , প্রকৃতি প্রীতি যতীন্দ্রনাথকে আকর্ষণ করতে পারেনি আর  পারিনি বলেই তিনি জড়বাদী , দুঃখবাদী এবং রােমান্টিকতা - বিরােধী কবি ।

যতীন্দ্রনাথের প্রথম তিনটি কাব্যে এই সুর সমানে বেজেছে । কিন্তু ‘ সায়ম ’ থেকে কবির । ভাব - ভাবনায় পরিবর্তন সূচিত হয়েছে , “ ত্রিযামা ’ এবং “ নিশান্তিকায় ’ তা স্পষ্ট প্রতিষ্ঠিত । দুঃখবাদী জীবনদৃষ্টি যতীন্দ্রনাথকে সৌন্দর্য , প্রেম ও প্রকৃতির রাজ্য থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিল । কিন্তু দুঃখবাদের মরুভূমিতে দীর্ঘকাল বিচরণ করতে করতে তার দেহ উত্তপ্ত ও মন ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল যৌবনের উদ্দাম প্রাখর্যে তিনি হৃদয়লােকের দুর্মর প্রেমপিপাসা ও যৌবনতৃষ্ণাকে অনুভব করতে পারেননি । বিশেষ করে তার উচ্চকণ্ঠ নেতিঘােষণার পশ্চাতে নিজের কামনা চাপা পড়ে গিয়েছিল । বার্ধক্যের হেমন্ত গােধুলিতে তিনি আপন দুঃখবাদী জীবনদর্শনের দীর্ঘকালীন সৃষ্টিকর্মের দিকে তাকিয়ে আপনি চমকে উঠলেন । এককালে যে সৌন্দর্য ও প্রেমকে ব্যর্থ নমস্কারে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন , আজ তারই সন্ধানের ব্যর্থতা ও আর্তি ফুটে উঠল কবির কণ্ঠে । যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের দুঃখবাদী দর্শন শেষ পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়েছিল বলে এরূপ মনে করবার কারণ নেই যে , উক্ত ভাবনার মধ্যে কোনরূপ আন্তরিকতা ছিল না । যতীন্দ্রনাথের প্রথম দিকের কবিতাগুলির সুর একটু উঁচু পর্দায় বাঁধা । এই জন্যও কেউ কেউ এদের অকৃত্রিমতায় সন্দেহ প্রকাশ করেছেন । কবির যৌবন ও প্রথম প্রৌঢ়ত্বের কবিতার সুর উচ্চগ্রামে বাঁধা , ব্যঙ্গ সুতীক্ষ ও প্রত্যক্ষ এবং কচিৎ প্রচার - বাসনা উগ্র হলেও তাদের উৎস কবির হৃদয় । পৃথিবী জুড়ে যে বহুবর্ণ ছলনার মায়াজাল বিস্তৃত তাতে কবি প্রতারিত হতে অস্বীকার করেছেন । এই বলিষ্ঠ প্রতিবাদই তাকে সামাজিক মানুষের বাস্তব দুঃখের নিকটে এনে ফেলেছে । আনন্দতত্ত্ব ও কাল্পনিক সৌন্দর্য তথা রােমান্টিক ভাবব্যাকুলতার কঠিন সত্যকে এড়িয়ে চলার মনােভাব তাঁর কবিতায় বিকৃত হয়েছে । কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থগুলিতে রূপক রচনার প্রবণতা যেমন বেশি তেমনি ব্যাঙ্গের সুর তীব্র । শেষ কাব্যগ্রন্থে স্বরগ্রাম নিচে নেমেছে । কবি কতকটা আত্মনিষ্ঠ হয়েছেন । রূপকের স্থানে রূপকল্প এসেছে । কবির কণ্ঠে বার্ধক্যের বিদায় - বেদনা বেজেছে ।


সন্দীপ চক্রবর্ত্তী
ব্যবত্তারহাট 🌼 নন্দকুমার 🌼 পূর্ব মেদিনীপুর

✍️ সন্দীপ চক্রবর্ত্তী

(ব্যবত্তারহাট, নন্দকুমার, পূর্ব মেদিনীপুর )

🙏 যদি আপনি আপনার গ্রাম বা শহরকে ভালোবেসে থাকেন, তাহলে আপনিও পাঠাতে পারেন আপনার এলাকার তথ্য আমাদের কাছে।
নীচের লিংকে ক্লিক করে যোগ দেন আমাদের সাথে, তথ্য পাঠান হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের এডমিন দের কাছে, আপনার তথ্যটি বিবেচনা করে সর্বসমক্ষে প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পেজ ও গ্রুপে।💐

আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সংযুক্ত হতে চাইলে এই লেখার উপর ক্লিক করুন 👈⬇️🔽⬇️🔽⬇️🔽⬇️🔽⬇️
আমাদের 👨‍💻 ওয়েবসাইটের ঠিকানা 👇
https://www.MEDINIKOTHA.in
আমাদের 🎦 ইউটিউবের ঠিকানা 👇
https://www.youtube.com/c/MEDINIKOTHA
আমাদের 🖼️ ইনস্টাগ্রামের ঠিকানা 👇
https://www.instagram.com/medinikotha
আমাদের 🤳 ফেসবুক গ্রুপের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/groups/medinikotha
আমাদের 🚻 ফেসবুক গ্রুপ কাঁথি মহকুমা ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/groups/contaigroup
আমাদের 🚀 টেলিগ্রাম গ্রুপের ঠিকানা 👇
http://t.me/medinikotha
আমাদের ✈️ টেলিগ্রাম চ্যানেলের ঠিকানা 👇
https://t.me/medinikatha
আমাদের 📧 ই-মেইল ঠিকানা 👇
medinikotha.contai@gmail.com
আমাদের 🗃️ কাঁথি পেজের ঠিকানা 👇 https://www.facebook.com/ContaiSubdivision
আমাদের 📖 দীঘা পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/DighaOldNew
আমাদের 📝 এগরা পেজের ঠিকানা👇
https://www.facebook.com/Egra2
আমাদের 📒 রামনগর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Ramnagar4
আমাদের 📔 হেঁড়িয়া পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Henria
আমাদের 📕 খেজুরী পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Khejuree
আমাদের 📙 নাচিন্দা পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/NachindaMa
আমাদের 📙 তাজপুর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Tajpoor
আমাদের 📓 শংকরপুর পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Sankarpoor
আমাদের 📃 সাতমাইল পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Satmile
আমাদের 📄 পেটুয়াঘাট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Petuaghat
আমাদের 🗒️ দেউলীহাট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Medinikotha6
আমাদের 📘 জুনপুট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Junput2
আমাদের 📗 বাঁকিপুট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Bakiput
আমাদের 📚 মান্দারমনি পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/Mandarmanee
আমাদের 🛰️ ওয়েবসাইট পেজের ঠিকানা 👇
https://www.facebook.com/medinikotha.in

Social Share

অনুসন্ধান !!

এখনকার খবর !!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *