⛈️ দিন দিন বাজ পড়া বাড়ে। 🌩️

👨🏻‍🎨 দোলন বারিক
✍️ রমনী কান্ত পাত্র

দিন দিন বাজ পড়া বাড়ে।

বঙ্গে পা রাখছে বর্ষা এখন প্রায় প্রতিদিনই বিকালে ‘ গুরু গুরু মেঘ গুমরি গুমির গরজে গগনে গগনে।’ ঘন ঘন বাজ পড়ার ফলে মানুষের জীবন হানি ঘটছে।আসুন জেনে নেওয়া যাক বাজ পড়ার কারণ,তার মাত্রা বৃদ্ধি ও কিছু সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা।

বাজ পড়ার কারণ : – বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরের চেয়ে নিচের স্তরে তাপমাত্রা কম।ফলে নিচ থেকে উপরের দিকে জল কনা যুক্ত মেঘের প্রবাহ ঘটে। উপরে জলকনার পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পেতে একটি নিদ্রিষ্ট সীমা অতিক্রম করলে জলের অণুগুলোর পারস্পরিক বন্ধন ভেঙে যায়, ফলে কনা গুলি আধান প্রাপ্ত হয়। এই অধনের মান নিচের স্তরের চেয়ে উপরের স্তরে বেশি। মেঘ গুলো শক্তিশালী ধারকের বৈশিষ্ট্য লাভ করে। শক্তিশালী তড়িৎ ক্ষেত্রের বিকর্ষনে পৃথিবীর অবস্থান রত ইলেকট্রন গুলো আরো গভীরে প্রবেশ করে বাতাস আয়নিত হয়। এই আয়নিত বাতাস মেঘ ও ভূপৃষ্ঠের মধ্যে শর্ট সার্কিটের ফলে বাজ পড়ে। আর এই স্বল্প সময়ের স্বল্প সময়ের ব্যবধানে বাতাসের সংকোচন ও প্রসারণের ফলে বিকট শব্দ হয়।

বর্তমানে ঘন ঘন বাজ পড়ার কারণ : – বাজ পড়া বৃদ্ধির অন্যতম কারণ পরিবেশ দূষণ ও আবহাওয়া ও জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তন,অর্থাৎ পরক্ষভবে দায়ী আমরা।আলোচনায় আসি একে একে।

বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্য :- কিছু দিন আগে ‘ যশ ‘ ঘূর্ণি ঝড়ে বাতাসে প্রচুর জলীয় বাষ্পের প্রবেশ,এর অন্যতম কারণ।

সবুজ ধ্বংস : নির্বিচারে সবুজ নিধন হচ্ছে দিন দিন।কৃষি জমিতে বস্তুতে রূপান্তর,জলাশয় ভরাট করা,পাহাড় কেটে ঝুম প্রথায় চাষ করা,বনাঞ্চল ধ্বংস করা এবং শহর জুড়ে রাস্তাঘাট তৈরি,আবাসন তৈরি করার জন্য নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে।ফলে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড এর পরিমাণ বাড়ছে।ফলে বাড়ছে পরিবেশে উষ্ণতা।

বিশ্ব উষ্ণায়ন : ধীরে ধীরে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঘটছে। এ রাজ্যে মে মাসে প্রচন্ড তাপপ্রবাহ ঘটেছে।দেখা গেছে কোন অঞ্চলে তাপমাত্রা দশ ডিগ্রী সেলসিয়াস বৃদ্ধি ঘটলে ওই অঞ্চলে বাজ পড়ার হার দশ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

পরিবেশ দূষণ : দূষণের মাত্রা বাড়ার সাথে বায়ুর তাপমাত্রা তত বৃদ্ধি ঘটে,ফলে বজ্র গর্ভ মেঘ সৃষ্টি হওয়ার আদর্শ পরিবেশ তৈরি হয়।গবেষকদের মতে বাতাসে কোন একটি দুষকের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতির জন্য বাজ পড়ার পরিমাণ বৃদ্ধি ঘটছে।
শহরে বাজ বেশি পড়ে ।কারণ নির্মাণ ও পরিবহন জনিত কারণে শহরে ধূলিকণা ও দূষণের হার বেশি।শহরের গাছের পরিমাণ কম,তাপমাত্রা বেশি।তাই পাশাপাশি গ্রামের চেয়ে শহরে বাজ পড়ার হার বেশি।তবুও শহরের চেয়ে গ্রামে বাজে মৃত্যুর হার বেশি।এর প্রধান কারণ গ্রামীণ মানুষের সচেতনতার অভাব।আর ফাকা মাঠে কাজ করা,আর ওই সময় কৃষিকাজে ব্যবহৃত ধাতব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার ফলে বাজে তড়িৎ আকর্ষিত হয়।

সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা : নিম্নে সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা গুলো নিলে মৃত্যুর হার কমানো যেতে পারে ।বাজ পড়ার সময় বিস্তৃতি খোলা জায়গা থেকে দ্রুত চলে এসে ঘরে বা নিরাপদ জায়গায় থাকতে হবে।বাজ পড়ার সময় খোলা জানলায় কাছে থাকা,ভেজা তার বা ধাতব দ্রব্যে হাত দেওয়া উচিত নয়।ওই সময় রবারের জুতো পরা উচিত ।উচু ভবনে আর্থিং এর ব্যবস্থা করা উচিত।বাজপরার সময় মোবাইল,টিভি,কম্পিউটার প্রভৃতি চালানো বা চার্চ করা উচিত নয় ।গাড়িতে থাকা অবস্থায় বজ্রপাতের পরিস্থতিতে গাড়ির মধ্যে থাকা নিরাপদ,তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে গাড়ির ধাতব কোন অংশে স্পর্শ না লাগে।বাজ পড়ে আহত ব্যক্তির শরীর ম্যাসেজ করতে হবে এবং দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে ।
সর্বোপরি পরিবেশ দূষণ রোধে ও সচেতনতা বৃদ্ধি করে বাজ পড়ে মৃত্যুর হার কমানো যাবে।

আপনিও পাঠাতে পারেন আপনার এলাকার তথ্য, আপনার লেখা ছড়া, কবিতা, ছোটগল্প বা আপনার আঁকা ছবি।
আমরা বিচার বিশ্লেষণ করে শর্তসাপেক্ষে তা সর্বসমক্ষে প্রকাশ করব, আপনাদের প্রিয় এই ওয়েবসাইটে
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সংযুক্ত হতে চাইলে এই লেখার উপর ক্লিক করুন 👈

Social Share

অনুসন্ধান !!

এখনকার খবর !!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *