

মহামারী(বাইশ)

শহর জুড়ে প্রেমের মহামারী
ভালোবাসার হোক সংক্রমণ
হৃদপিন্ডে অসুখ সুখের বাসা
মনের জন্য মনের মনকেমন।
নিম্নচাপের ধূসর অভিমান
বিষাদ অতীত শুধুই ফেলে আসা
মেঘলা আকাশ প্রেমের কথা বলুক
হৃদ গহীনে জমুক ভালোবাসা।
রোজ আমরা কুড়িয়ে নেব রোদ
চাঁদ জ্যোৎস্নায় হৃদয় মাখামাখি
নীল তারার স্বপ্ন আঁকা চোখে
বুক বেঁধে আলোর আকাশ দেখি।
সবুজ মাখুক মাটির রুক্ষ বুক
বৃষ্টি নামুক জলতরঙ্গের সুরে
শ্রাবণ মেঘে দরজা খোলার ডাকে
চল না হারাই সেই অচীনপুরে।
সেই যেখানে ফাগুন রাঙা দেশ
চারিদিকে প্রেমের মরসুম
আন্দোলনে ভালোবাসার মিছিল
চির বসন্ত কাটায় শীতঘুম।
দিন বদলের পালায় এলো ‘বাইশ’
মানুষ বাঁচুক হৃদয়ের কথা শুনে
এই বছরটা হোক না অন্যরকম
লাল পলাশ ফুটুক মনের কোণে।

আপনিও পাঠাতে পারেন আপনার এলাকার তথ্য, আপনার লেখা ছড়া, কবিতা, ছোটগল্প বা আপনার আঁকা ছবি।
আমরা বিচার বিশ্লেষণ করে শর্তসাপেক্ষে তা সর্বসমক্ষে প্রকাশ করব, আপনাদের প্রিয় এই ওয়েবসাইটে।
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সংযুক্ত হতে চাইলে এই লেখার উপর ক্লিক করুন 👈

2 thoughts on “।। মহামারী (বাইশ) ।।”
বিয়ের রাত, মাস্টারদা এসেছেন বিয়ে করতে। বিয়ের মন্ত্র পড়া হবে ,এমন সময় হঠাৎ পাশ থেকে একজন মাস্টারদার হাতে গুঁজে দিল একটু চিরকুট। চিরকুট পড়ে খুবই চিন্তিত ও গম্ভীর হয়ে গেলেন মাস্টারদা। গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ এসেছে কলকাতার দলের উচ্চমহল থেকে। ফুলশয্যার রাতে নির্জন কক্ষে সহধর্মিণী পুস্পকে বললেন ” তোমার কাছে আমার অপরাধের সীমা নেই। তুমি আমার অগ্নি সাক্ষী করা স্ত্রী। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তুমিই আমার স্ত্রী থাকবে। দলের গুরুত্বপূর্ণ কাজে আমার ডাক এসেছে।আজ ই তোমার কাছ থেকে আমাকে বিদায় নিতে হবে।” অশ্রুসিক্ত নয়নে মাস্টারদাকে বিদায় দিয়েছিলেন নব বিবাহিতা স্ত্রী পুস্প। শুধু জিজ্ঞেস করেছিলেন মাস্টারদার চিঠি পাবে কিনা। কথা রেখেছিলেন মাস্টারদা। চিঠি আসতো পুস্পর কাছে, খুব গোপনে।সে চিঠি শুরু হতো ” স্নেহের পুস্প” দিয়ে আর শেষ হতো ” তোমার ই সূর্য ” দিয়ে। আর দেখা হয়নি স্বামী স্ত্রীর? হয়েছিল,পুস্প যখন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত, মৃত্যু পথযাত্রী, সূর্য তখন জেলে। প্যারোলে কয়েক ঘণ্টার জন্য ছাড়া পেয়ে স্নেহের পূস্পকে দেখতে এসেছিলেন মাস্টারদা। কিন্তু তার আগেই জীবনদীপ নিভে গেছে পূস্পর।
২রা ফেব্রুয়ারী ১৯৩৩ ….
পলাতক সূর্য সেনকে গৈরালা গ্রামে নিয়ে এসেছেন বিপ্লবী ব্রজেন সেন । মাষ্টারদার সাথে রয়েছেন তার একান্ত অনুগত শান্তি, কল্পনা দত্ত, সুশীল ও মণি দত্ত । তাঁরা ছিলেন গ্রামের বিশ্বাস বাড়িতে, পরম যত্নে আগলে রেখেছিলেন সে বাড়ির বড়বধূ ক্ষিরোদপ্রভা ।
বেশ ছিলেন কিন্ত বিপদ এলো অন্য দিক দিয়ে । প্রতিবেশী নেত্র সেনের সন্দেহ হলো কারা আছে বিশ্বাস বাড়িতে ? কিসের এত ফিসফাস গুঞ্জন । খবর লাগাতে বললেন নিজের গিন্নিকে ।
গ্রাম্য বধূটি সরল মনে এসে বললো ও বাড়িতে সূর্য সেন লুকিয়ে আছে গো ! অমন লোককে খাওয়ালেও যে পূণ্যি লাভ !
শুনে লাফ দিয়ে উঠলো নেত্র । খবর দিলেই যে কড়কড়ে দশ হাজার টাকা ! বউকে আশ্বস্ত করে
ব্যাগ হাতে তখনই বেরিয়ে পড়লো, সোজা উঠলো গিয়ে থানায় ।
সেদিন রাতে ঘুম ভাঙতে চমকে উঠলো ব্রজেন , জানলা দিয়ে লণ্ঠন দেখিয়ে কি করছে দাদা নেত্রীর সেন ? এক মিনিটও লাগলো না বুঝতে, ছুট লাগালেন বিশ্বাস বাড়ির দিকে । দেরী হয়ে গেছে ততক্ষনে, ক্যাপ্টেন ওয়ামসলের নেতৃত্বে গোটা বাড়ি ঘিরে ফেলেছে গোর্খা সেনার দল।রকেট বোমার আলোতে সবকিছু দিনের মতো স্পষ্ট ।
পরদিন সমস্ত সংবাদপত্রের হেডলাইন….. গৈরালা নামক গ্রামে সূর্য সেন গ্রেফতার । এনাকে ধরবার জন্য সরকার দশহাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করিয়াছিলেন ।( অমৃতবাজার পত্রিকা ১৭.২.১৯৩৩)
তিনদিন পর………
সন্ধে বেলায় জলখাবার খেতে বসেছে নেত্র সেন,পাশে স্ত্রী । দরজায় শব্দ হতে উঠে গিয়ে খুলে দিলেন। পাড়ারই চেনা ছেলে দেখা করতে এসেছে স্বামীর সঙ্গে । সবে উনি ভাবছেন সেখান থেকে সরে যাবেন কিনা, আচমকা পাড়ার সেই ছেলের হাতের ভোজালির কোপে স্বামীর মুণ্ডু ছিটকে পড়লো!
থরথর কাঁপছেন গ্রাম্য বধূ । ঘাতক যাওয়ার আগে বলে গেলেন, মাস্টার দার সঙ্গে বেইমানি করার উপযুক্ত শাস্তি ।
বৃটিশ পুলিশ কতবার কতভাবে জেরা করেছে সাধারণ আটপৌরে ঐ বধূটিকে। একবার তিনি বলুন স্বামীর ঘাতকের নাম। মুখ খোলেননি নেত্র সেনের বিধবা |
শুধু বলেছিলেন চোখের সামনে তিনি স্বামীকে লুটিয়ে পড়তে দেখে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত । স্বামী হারানোর যন্ত্রণায় এখন কষ্ট পাচ্ছেন, আর কিছুই বলার নেই। কিন্তু যে মানসিক যন্ত্রণায় তিনি সবথেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন তা হল এই জেনে যে তাঁর স্বামী নেত্র সেন একজন বিশ্বাসঘাতক, যিনি পুলিশের পুরস্কারের লোভে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন মাস্টার দার মতো ব্যক্তির সঙ্গে । তাই তাঁকে হত্যা করে ঠিকই করেছেন মাস্টার দার সহযোগী ঐ তরুণ। মেরে ফেললেও তিনি ওই বিপ্লবীর নাম ফাঁস করবেন না ।
হয়রানির বেশি আর কিছু নেত্র সেনের স্ত্রীকে করেনি ব্রিটিশ পুলিশ | ততদিনে তাদের উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয়ে গেছে | কারাগারে নির্মম অত্যাচার করা হচ্ছে মাস্টার দার উপরে |
অনেকদিন পর জানা গেছিল হত্যাকারী আর কেউ নয়, ….. …..সেন বংশের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার দায়িত্ব স্বেচ্ছায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিল ঐ বাড়িরই ছোট ছেলে কিরন সেন । মাষ্টারদা মরার আগে জেনে গেছিলেন দেশদ্রোহীকে চরম দন্ড দিতে তাঁর মন্ত্রশিষ্যরা এতটুকু দয়া দেখায়নি ।
মুক্তির মন্দিরের সোপান তলে এরকম কত কিরণ নিঃশব্দে দিয়েছে বলিদান ……আমরা মনে রাখিনি।
বাঙালির সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সেনাপতি মাস্টারদার জন্মদিনে আজ স্মরণ করি স্বাধীনতার সেই অনামী সেনানীকে,আর প্রণাম জানাই সেই গ্রাম্য বধুকে শত প্রলোভনেও যিনি উচ্চারণ করেননি তার বিশ্বাসঘাতক স্বামীর হত্যাকারীর নাম।
“তোমাকে ভুলে গেলে নিজেকে ভুলে যাওয়া।
তোমার বিপ্লব আজও উদিয়মান সূর্যের আলোর মতো।
যতোদিন এই পৃথিবীতে সূর্য উঠবে, ততোদিন তুমিও থাকবে মাস্টারদা সমগ্ৰ ভারতবাসীর অন্তরের অন্তঃস্থলে।”
( Collected by – Manik Chandra Pahari)
ধন্যবাদ 🙏 আপনার এই অমূল্য মতামত প্রকাশের জন্যে। 💐 এইভাবে আমাদের সাথে থাকুন, পাশে থাকুন।
মেদিনীকথা গ্রুপের তরফ থেকে সকল কাঁথি মহকুমাবাসীর জন্য নিয়ে এলো একটি ওয়েবসাইট- https://medinikotha.in
এই ওয়েবসাইটের মূল লক্ষ্য হলো কাঁথি মহকুমার অন্তর্গত এলাকাগুলির তথ্য যেমন- (স্থানীয় সংবাদ, ইতিহাস, সাহিত্য-সংস্কৃতি, পর্যটন, শিল্পকলা, ইত্যাদি) সর্বসমক্ষে তুলে ধরা।
আপনারা আপনাদের পছন্দের কাঁথি মহকুমা এলাকার তথ্য, ঘটনা (ফোটোগ্রাফ ও ভিডিও), আঁকা-ছবি, ছোটোগল্প, অণুগল্প, ছড়া, কবিতা, সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনধর্মী প্রবন্ধ, সরাসরি আমাদের কাছে তুলে ধরতে পারেন। প্রতিবার তথ্য প্রেরণের সময় আপনার নিজের ছবি ও নাম সহযোগে পাঠাতে হবে আমাদের কাছে।
আমরা আপনার প্রেরিত তথ্য বিচার বিশ্লেষণ করে website এ প্রকাশ করবো।
বি: দ্র: – [ কোনো কিছু প্রদানের সময় মনে রাখবেন আপনার প্রেরিত তথ্য যেনো সম্পূর্ণ রূপে আপনারই হয়, পরবর্তী সময়ে আপনার প্রেরিত তথ্য কোনো প্রকার চুরি বা ভুল প্রমাণিত হলে, আইনত সম্পূর্ণ দায়ভার আপনার উপর বর্তাবে। ]
আমাদের ওয়েবসাইটে কোন প্রকার রাজনৈতিক, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত সংক্রান্ত, জাতি ও বর্ণবিদ্বেষ মুলক খবর প্রকাশ করা হয় না।